ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

বাউফলে তথ্য গোপন করে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন

বাউফলে তথ্য গোপন করে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

তথ্য গোপন করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ছোট ডালিমা আবদুস ছালাম মৃধা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোসা. মরিয়ম বেগম নিজেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে তিন ক্যাটাগরিতে সদস্য মনোনয়ন নিয়ে ওই কমিটি গঠন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 গত শুক্রবার বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ওই এডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন নাজমুল আহসান জামিল। কোনো কারণ উল্লেখ না করেই ২০১১ সালের ২২ মে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

ওই সাময়িক বরখাস্তের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক পটুয়াখালী আদালতে মামলা করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি আদালত প্রধান শিক্ষকের বকেয়া বেতন-ভাতা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে নির্দেশ দেন। ওই আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান শিক্ষকের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যাতে তিনি যথাযথভাবে পালন করতে পারেন, তা তদারকসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। 


উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আদালতের নির্দেশ মোতাবেক প্রধান শিক্ষককে বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সহকারী শিক্ষক মরিয়ম বেগম তথ্য গোপন করে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দাবি করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছ থেকে অভিভাবক সদস্য মনোনয়ন নিয়ে শুক্রবার (১৬ জুলাই) বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি অনুমোদন নিয়েছেন।


প্রধান শিক্ষক নাজমুল আহসান অভিযোগ করেছেন,আদালতের আদেশ পেয়ে তিনি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে বিদ্যালয়ের গোপন পাসওয়ার্ড ও সিমকার্ড পাওয়ার আবেদন করেছেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের গোপন পাসওয়ার্ড দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষাবোর্ডের পাসওয়ার্ড ও সিমকার্ড দেওয়া হয়নি। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সহকারী শিক্ষক মরিয়ম বেগম তাঁকে (প্রধান শিক্ষক) না জানিয়ে কমিটি গঠন করেছেন। চার সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটিতে একজন তাঁর স্বামী, একজন দেবর এবং নিজে সদস্য সচিব হয়েছেন।

এ বিষয়ে মোসা. মরিয়ম বেগম বলেন,ব্যবস্থাপনা কমিটি তাঁকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছে। দুই বছর মেয়াদি ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত ১৫ জুন। এ কারণে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি করার জন্য আবেদন করেছেন। বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন কিভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হলেন?- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন তিনি।


ইউএনও জাকির হোসেন তথ্য গোপন করে কমিটি করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি যাঁকে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলাম তা বাতিল ঘোষণা করে গত ৩০ জুন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি। এরপরেও কিভাবে কমিটি অনুমোদন পেল তা আমার বোধগম্য নয়।

বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মাদ ইউনুস বলেন, প্রত্যেক বিদ্যালয়ের গোপন পাসওয়ার্ড আছে। ওই পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে এডহক কমিটির জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে তথ্য গোপন করে আবেদন করলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ইউএনওর শেষের চিঠির বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন