বাউফলে ৮০ বছরের দরিদ্র বৃদ্ধ ইট ভেঙে চালান সংসার


৮০ বছরের বৃদ্ধ মো. নূরু আকন। বসত ভিটে ছাড়া তাঁর কিছুই নাই।সরকারি কোনো ভাতার তালিকায় তাঁর নাম নাই। তাই বয়য়ের ভারে ন্যুব্জ হয়ে গেলেও বাঁচার তাগিদে তিনি ইট ভাঙার মত কঠিন কাজ করেন। সেই কাজ করার সুযোগও এখন বন্ধ হওয়ার পথে। অধিকাংশ মানুষ এখন ইট ভাঙেন যন্ত্রচালিত মেশিনে। এ কারণে স্ত্রী হাজেরা বেগমকে (৬৫) নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
সম্প্রতি বাউফল পৌরসভার মুসলিমপাড়া সড়কে ইট ভাঙার কাজ করছিলেন নুরু আকন।তখন কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, বয়সের কারণে ইট ভাঙতে অনেক কষ্ট হয়।কিন্তু কি কইরা খামু? বয়স্ক ভাতায় নাম দিতে হইলে টাহা (টাকা) লাগে। নাম দেওনের লইগা মহিলা কমিশনার (নারী কাউন্সিলর) পাঁচ হাজার টাহা চাইছিল। দিতে পারি নাই। হেই লইগা আর বয়স্কভাতায় নাম দেয় নাই।
নুরু আকন আরও বলেন,আগে প্রতিদিন ইট ভেঙে সাড়ে তিনশ থেকে চারশ টাকা পেতেন।এহন ইট ভাঙার কাম (কাজ) কম। হক্কোলে (সবাই) মেশিন দিয়া ইট ভাঙে। বয়সের লইগা এখন আর আগের লাহান (মত) ইট ভাঙতে পারি না। রোজ দেড়শ থেকে দুইশ টাহা পাই।হেইয়া দিয়ে চলতে খুবই কষ্ট হয়। অনেক সময় না খাইয়াও থাকতে হয়।অসুখ (রোগ) অইলে টাহার অভাবে চিকিৎসা করাইতে পারি না। বাবা (সাংবাদিক) আমারে বয়স্কভাতায় একটা নাম দেওনের ব্যবস্থা কইরা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,সরকারি ভাতাভোগীদের কোনো তালিকায়ই নাম নাই নূরু আকন ও তাঁর স্ত্রী হাজেরা বেগমের।হাজেরা বেগম অন্যের ঘরে ঝিয়ের কাজ করেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান দুঃখপ্রকাশ করে বলেন,‘সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাঁর কাছে তালিকা আসে। তাঁর (নূরু) নাম বয়স্কভাতার তালিকায় কেউ দেয়নি।’
এ বিষয়ে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক বলেন,‘তিনি (নুরু আকন) যে বয়স্কভাতা পান না, তা আমার জানা ছিল না।তাঁর মত দরিদ্র ও বয়স্ক মানুষ বয়স্কভাতার তালিকায় নাম না থাকাটা খুবই দুঃখজনক। পরবর্তী বয়স্ক ভাতার তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভূক্তির যাবতীয় ব্যবস্থা করা হবে।’
এইচকেআর
