ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

ভারতের জলসীমায় মার্কিন রণতরী, নীরব মোদি সরকার

ভারতের জলসীমায় মার্কিন রণতরী, নীরব মোদি সরকার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

 

দক্ষিণ চীন সাগরে এত দিন ভারতের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘ড্রাগন’কে (চীনা রণতরী) ঠেকাতে দেখা গেছে তাদের। বিপদে এতদিন তাদের পাশেই পেয়েছে ভারত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সেই নৌবাহিনীই এবার ‘বিনা অনুমতি’তে আরব সাগরে ভারতের ‘নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এ ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মার্কিন নৌবাহিনীর এই পদক্ষেপ ভারতের সামুদ্রিক সুরক্ষা নীতির পরিপন্থী বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। তবে দিল্লির পক্ষে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।

আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, উপকূল থেকে সমুদ্রের ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকা যে কোনো দেশের জলসীমা বলে বিবেচিত হয়। তবে জাতিসংঘের সমু্দ্র আইন অনুযায়ী, উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় অর্থনৈতিক কাজকর্ম চালানোর অধিকার রয়েছে কোনো দেশের, যাকে কি-না তাদের ‘নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল’ বলা হয়। জাতিসংঘের ওই আইনের পক্ষে যেসব দেশ স্বাক্ষর করেছে, ভারত তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে স্বাক্ষর করেনি। তাই আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সুরক্ষা আইন অনুযায়ী লক্ষদ্বীপের কাছে টহল দিয়ে তাদের নৌবাহিনী কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেনি বলে জানিয়েছে তারা।

গত ৭ এপ্রিল মার্কিন নৌবাহিনীর সপ্তম বহর লক্ষদ্বীপের পশ্চিমে ভারতের ‘নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এর ১৩০ নটিক্যাল মাইলে ঢুকে পড়ে। এ নিয়ে তাদের জনসংযোগ বিভাগের (পাবলিক অ্যাফেয়ার্স) পক্ষে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘৭ এপ্রিল (স্থানীয় সময়) ইউএসএস জন পল জোন্স জাহাজটি নাব্যিক অধিকার এবং স্বাধীনতা প্রয়োগ করে লক্ষদ্বীপের পশ্চিমে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় ১৩০ নটিক্যাল মাইল ভিতরে প্রবেশ করে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে এর জন্য আগে থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি। ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে সামরিক মহড়া বা কসরত চালাতে গেলে আগে থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে এই নিয়ম খাটে না’।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নৌবহর নিয়ে এই ধরনের স্বাধীন অভিযান চালিয়ে থাকি আমরা। অতীতেও চালিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও চলবে। এটা কোনো একটি দেশের বিষয় নয়। আর এর মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থানও প্রকাশ পায় না।’

বিনা অনুমতিতে মার্কিন নৌবাহিনীর এই অভিযান নিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতীয় নৌবাহিনী এবং বিদেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যে চতুর্দেশীয় বৈঠক হয়েছিল, তাতে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল তথা জলভাগে পারস্পরিক সহযোগিতার উপরই জোর দেওয়া হয়েছিল। আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেছিল সব দেশই। 

মূলত চীনকে ঠেকাতেই এই সমবেত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। তার পর দফায় দফায় মহড়াও হয়। কিন্তু আমেরিকার নৌবাহিনীর এই অভিযানের পর সেই অঙ্গীকারই এখন প্রশ্নের মুখে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।


টিএইচএ/
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন