ঢাকা রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

Motobad news

গাড়ি না চললে খামু কি?

গাড়ি না চললে খামু কি?
রিকশা চালক আব্দুল জলিল হাওলাদার।
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

এই লকডাউন তো গরিবের পেটে লাথি মারার লকডাউন। দিনমজুর না খাইয়া মরবে। ব্যবসায়ীর ১৬ টাহার আলু ২০ টাহা, নিত্যপণ্যের দাম তরতর কইরা বাড়তাছে, তাগো তো লস নাই। বাসের ভাড়া বাড়ছে, অটো, সিএনজির ভাড়া বাড়ছে; বাড়েনা খালি রিকশা ভাড়া। না খাইয়া মরিতো আমরাই। আমাগো রিকশা না চললে পেটে ভাত পড়ে না। গাড়ি চালাইয়া সংসার চালাই। রাস্তায় মানুষ না থাকলে আয় ইনকাম তো অয় না। আমাগো তো মাস শেষে কোনো বেতন নাই, ভাতা নাই, ছুটিও নাই। এই যে লকডাউন দেছে আমরা যে না খাইয়া মরমু আমাগো কি কেউ খাওয়াইবে? 

লকডাউনে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন বরিশাল নগরীর আব্দুল জলিল হাওলাদার। সন্ধ্যায় নগরীর আমতলা পানির ট্যাংকি থেকে চৌমাথা যাওয়ার পথে আলাপকালে আক্ষেপ নিয়ে এভাবেই বলছিলেন জলিল হাওলাদার।

তিনি জানান,  বুধবার রাত ৯ টা পর্যন্ত সারাদিনে আয় হয়েছে ২২০ টাকা। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক তার আয়  ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এদিকে বৃহস্পতিবার তার ১৪ শ টাকার কিস্তির কথা উল্লেখ করে বলেন আজ লকডাউনের মধ্যে জেলা স্কুলের সামনে পুলিশে রিকশার তার টেনে ছিড়ে ফেলছে। সেটা ঠিক করতে লাগে ৫০০ টাকা। 

লকডাউনে চরম আর্থিক সংকট ও অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে বরিশালের নিন্ম আয়ের মানুষ। বিশেষ করে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দিনমজুররা। একদিন রোজগার বন্ধ থাকলে ২ বেলা পেট পুরে খেতে পারেন না এসব মানুষ। দরিদ্র, ছিন্নমূল, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তার জরুরি উদ্যোগ ও নগদ আর্থিক সহায়তার পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

দারিদ্র্য ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব’ শিরোনামে সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক ফোরামের (সানেম) এক জরিপে উল্লেখ করা হয়, করোনায় দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ, যা ২০১৮ সালে ছিল ২১.৬ শতাংশ। এ ছাড়া শহরাঞ্চলে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালে ছিল ১৬.৩ শতাংশ, যা করোনাকালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৪ শতাংশ। জরিপে বলা হয়, করোনা মহামারীর প্রভাবে চরম দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে কয়েক শতাংশ। সানেমের জরিপ অনুসারে ২০১৮ সালে এটি ছিল ৯.৪ শতাংশ। আর ২০২০ সালে মহামারির প্রভাবে তা বেড়ে হয়েছে ২৮.৫ শতাংশ।

টিএইচএ/
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন