বাসচাপায় মিম নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি ববি শিক্ষার্থীদের


বাসচাপায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিম এর নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর ) বেলা দেড়টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্যের মতবিনিময়ের সময় এ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.রাহাত হোসেন ফয়সাল বলেন, আমরা কালকে রাত থেকে কাজ করতেছি। সব দাবিগুলো আমরা অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। ক্ষতিপূরণের বিষয়টা নিয়ে আমরা বাস মালিক ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলবো।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড শূচিতা শরমিন বলেন, আমরা এরই মধ্যে বিআরটিএ এর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলছি। যতদ্রুত সম্ভব আমরা ঐ খুনি বাসক চালককে গ্রেপ্তারের জন্য কথা বলেছি। বাস মালিককে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসবো।
এ সময় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো শওকত আলী বলেন, আমরা তোমাদের সব দাবি দাওয়া শুনেছি। আমরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।
তিনি জানান, সড়কে স্প্রিড ব্রেকার বসানোর কাজ চলছে। ট্রাফিক পুলিশ থাকবে। সড়কে ফুটপাতের যে দাবি করেছো তা একটু দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করতে।
এদিকে বাসের ধাক্কায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোলা রোড সংলগ্ন মোড়ে নারায়নগঞ্জ এক্সপ্রেস ওই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিলে তার মৃত্যু ঘটে। নিহত মাইশা ফৌজিয়া মিম পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনার পরপরই প্রায় ৫ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে এবং বাসটিকে আটক করে শিক্ষার্থীরা আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ১০ দফা দাবিতে ফের বরিশাল-কুয়কাটা মহসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এতে করে বরিশালের সাথে দক্ষিঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়, বিপাকে পরে সাধারণ যাত্রীরা।
এর আগে বুধবার মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার মধ্যে বাস চালককে গ্রেপ্তারের আশ্বাসে সড়ক ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
ববি’র বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী আওলাদ হোসেন জানান, কালক্ষেপণ হলেও ঘাতক চালককে গ্রেপ্তারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে পুনরায় সড়ক অবরোধে নেমেছি আমরা। আমাদের ১০ দফা দাবি রয়েছে যদি এ দাবি না মানা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবো আমরা। আমাদের দাবি গুলো হচ্ছে-মাইশার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, বাসের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করে গণমাধ্যমে প্রচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে গাড়ির গতিসীমা নির্ধারণ, সড়কে স্পিড সেন্সর স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতকরণ, অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা বৃদ্ধি, ক্যাম্পাসের সব সড়ক মেরামত এবং ট্রাফিক পুলিশ নিযুক্ত করা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে খুব দ্রুত বাসটির চালক ও মালিকপক্ষকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো তারা যেন একটু ধৈর্য ধারণ করে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁঞা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমাদের ফোর্স এরই মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে। অতিদ্রুতই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
অপরদিকে দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিহতের জানাজা হয়েছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মাচরী ও স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করেন।
এইচকেআর
