ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

Motobad news

বরিশালে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি, ধরা পড়ছে বড় বড় ইলিশ

বরিশালে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি, ধরা পড়ছে বড় বড় ইলিশ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

আষাঢ়ের শেষ দিকে বরিশালে দিনভর ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি। মাছ ধরার উপযুক্ত মৌসুম বলা হয় বর্ষাকে। নদী-নালা, ভালো-বিলে আসে নতুন পানি আর এই নতুন পানিতে বৃদ্ধি পায় মাছের প্রজনন। 

জেলার কীর্তনখোল, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, কালাবদর নদীতে তাই ইলিশের আশায় নেমেছে জেলেরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চলমান বৃষ্টি ইলিশ আহরণের জন্য সুসময়। ফলে জালে ধরা পড়ছে বড় ইলিশ। 

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক বশির আহমেদ বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। যা ৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার। আগের দিন গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হয়েছে ১১ মিলিমিটার। এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। 

বরিশাল জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, আষাঢ়ের এই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিই তো রুপালী ইলিশের জন্য সুসময়। বৃষ্টিই ইলিশ নিয়ে আসবে। এ বৃষ্টি পুরোপুরি ইলিশের জন্য উপযোগী। 

এ সময়ে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ার কথা। মেঘনাসহ অন্য নদীতে বড় ইলিশ ধরাও পড়ছে। পোর্টরোড মৎস্য মোকামেও ইলিশের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। 

পোর্ট রোডের লিয়া মৎস্য আড়তের আড়তদার রুবেল হোসেন বলেন, শুক্রবার মোকামে প্রায় ৬০ মণ ইলিশ সরবরাহ হয়েছে। এদিন এলসি (৬০০-৯০০ গ্রাম) আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া এক কেজির ইলিশ ১ হাজার ৭০০ ও ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। 

বৃহস্পতিবার এলসি আকারের ইলিশ কেজি প্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ১ হাজার ৭০০ ও ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৩৭৫ টাকা পাইকারি বিক্রি হয়েছে। 

আড়তদার রুবেল হোসেন বলেন, এখন যে ইলিশ ধরা পড়ছে তা এলসি আকারের কিংবা এক কেজি ওজনের বড় বড় আকারের। এদিকে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ইলিশ আসছে তাই মোকামও চাঙা হচ্ছে। 

আড়িয়াল খা নদীতে ১৫ বছর ধরে মাছ ধরেন বরিশাল সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদের জেলে ইমাম হোসেন ও ফজল মিয়া। 

তাঁরা জানান, বিধিনিষেধ মানতে মানতে তারা অনাহারে-অর্ধহারে পরিবার নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। দাদন মেটাতে আষাঢ়ে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছেন। মেঘনা নদী ঘেরা হিজলা মেহেন্দীগঞ্জেও জেলেরা নেমে গেছে মৌসুমের শুরুতেই। 
হিজলার গৌরবদী ইউপির জেলে মঞ্জু মিয়া, রজব আলী বলেন, আষাঢ়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যে ইলিশ ধরা পড়ছে তা বড় আকারের তবে তা খুব বেশি না। পাওনা মেটাতে তারা নদীতে। 

হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাস্মাদ আলম জানান, জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় বড় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তার এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। তিনি জেলেদের আশ্বস্ত করেছেন এই বৃষ্টিতে ধরা পড়বে ইলিশ।

এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, নদীতে ইলিশ ধরায় জেলেদের এখন আর বাধা নেই। আষাঢ়ের বৃষ্টিতে নদীতে বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়া শুরু হয়েছে। 

কারণ এবার জাটকা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। এ কারণে বিভাগের ৬ জেলার ৪ লক্ষাধিক জেলে এখন ইলিশ ধরায় নদীতে ছুটছেন। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় রয়েছে ৭৫ হাজার জেলে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন