ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

Motobad news

বরিশালে ডাকাত সর্দারসহ আটক ৮, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার  

বরিশালে ডাকাত সর্দারসহ আটক ৮, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার  
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরিশ‍ালের বাকেরগঞ্জ এবং ঢাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ডাকাত সর্দারসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের আট সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি খেলনা পিস্তলসহ বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র। আটক ডাকাত দলের সদস্যরা বরিশাল, পটুয়াখালী এবং কুয়াকাটার কয়েকটি এলাকায় বড় ধরনের ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর রূপাতলী এলাকায় র‌্যাব-৮ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র‌্যাব-৮ এর লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আরাফাত ইসলাম।

আটককৃতরা হলেন- ডাকাত দলের সর্দার বাকেরগঞ্জ উপজেলার মহেশপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম (৪৮), একই গ্রামের বাসিন্দা এবং ডাকাত দলের উপ-প্রধান শাওন ইসলাম সোহাগ (২৪), একই গ্রামের মিজান চৌকিদার (৪০), নাসির হাওলাদার (৪০), পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালাম হোসেন (৩৫), রাঙাবালি উপজেলার আব্দুর রহিম হাওলাদার (৪০), বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকার রাজা খলিফা (২৫) এবং বরগুনার আমতলী উপজেলার সেলিম মাতবর (৫০)।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানিয়েছে, ‘ডাকাত দলটি বাকেরগঞ্জ উপজেলার মহেশপুরে দলের প্রধান আব্দুল হাকিমের বসতঘরে অবস্থান নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় সেখান থেকে ডাকাত দলের প্রধান আব্দুল জাকিম, মিজান চৌকিদার এবং আব্দুর রহিম হাওলাদারকে আটক করতে পারলেও বাকিরা পালিয়ে যায়।

পরে আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ধরেশ্বরী টোল প্লাজা এলাকায় র‌্যাব-১০ এর সহযোগিতায় অভিযান চালায় র‌্যাব-৮। সেখান থেকে ডাকাত দলটির অন্যতম প্রধান সহযোগী সোহাগসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।

অভিযানকালে ডাকাত দলের সদস্যদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তলসহ বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন র‌্যাব সদস্যরা।

র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের সদস্যরা স্বীকার করেছে তারা আন্তঃজেলা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা ১৫ জন। দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল হাকিম ও সোহাগের নেতৃত্বে বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং ভোলাসহ বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা এবং অফিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি সংঘটিত করে আসছিল।

এর মধ্যে ডাকাত দলের প্রধান আব্দুল হাকিমের নেতৃত্বে বরিশাল এবং পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। একই ভাবে অপর একটি দলের নেতৃত্ব দিতেন দলের উপ-প্রধান সোহাগ। তবে মাঝে মধ্যে দুটি গ্রুপ এক সঙ্গেই ডাকাতি করতো।

র‌্যাব জানিয়েছে, ‘আটককৃতরা ইতিপূর্বে বিভিন্ন মামলায় কারাভোগ করেছে। এসময় কারাগারে থাকা অন্যান্য ডাকাতদের সাথে পরিচয় হয় তাদের। পরে তাদের কাছ থেকে ডাকাতির বিষয়ে বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করতো। পরবর্তীতে কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে রপ্তকৃত কৌশল ব্যবহার করে ডাকাতি করতো বলে র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আরাফাত ইসলাম আরও জানান, ‘ডাকাত দলের প্রধান আব্দুল হাকিম পেশাদার ডাকাত। তিনি ২০-২২ বছর ধরে ডাকাতির সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, জালিয়াতি ও ডাকাতির ঘটনায় ১০টি মামলা রয়েছে।

দলের অন্যতম প্রধান সহযোগী সোহাগ পেশায় একজন গাড়ি চালক ছিলেন। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে ৮টি মামলা। আটক মিজান পেশায় ছিলেন গাড়ির হেলপার এবং রহিম ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। এছাড়া আটক কামাল, রাজা, নাসির ও সেলিম ডাকাত দলে যোগদান করেন সোহাগের মাধ্যমে।

কামালের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৮টি মামলা রয়েছে। এছাড়া রাজা, নাসির ও সেলিমের বিরুদ্ধেও দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি এবং মারামারি সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে। তারা কারাভোগও করেছেন একাধিকবার।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন