পাটের দাম নেই, পুঁজি হারানোর শঙ্কায় কৃষকেরা


গত কয়েকদিন ধরে পাট বিক্রির চেষ্টা করেও বারবার পিছপা হয়েছেন কৃষক আব্দুস সালাম। কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে হাটে তুলেও পাট নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। এখন লোকসানের হিসাব কষে চিন্তিত তিনি।
এই কৃষক বলেন, যতখানি আশা ভরসা নিয়ে আবাদ করি, ওই আবাদের মূল্য পাই না। খরচাপাতি বেশি অথচ দাম নেই। পাটের মণ সর্বোচ্চ চার হাজার টাকা হলে আমরা লাভবান হতাম। দাম না বাড়লে পাট চাষ করে পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।
কৃষক আব্দুস সালামের বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়ের বড়মটুকপুর গ্রামে। গত সোমবার সকালে গনমাধ্যমের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে পাটের বাজার দর নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা তো সরকারের কাছে আগে থেকেই পাটের দাম বাড়ানোর জন্য দাবি করে আসছি। কিন্তু সরকার তো পাটের দাম বাড়ায় না।
চারদিকে শুধু সিন্ডিকেট চলছে। এখন সারের দাম বেশি, মজুরিও বেশি। কিন্তু কোথাও পাটের ন্যায্যমূল্য নেই। সরকার যদি ভর্তুকি দেয় তাহলে আমরা কৃষকেরা বাঁচতাম।
মমিনপুরের এই কৃষকের মতো রংপুর জেলার বেশির ভাগ কৃষকের কণ্ঠে পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার আক্ষেপ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর বেশি দামে কিনে রাখা অনেক পাট ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুত রয়েছে। এ বছর নতুন পাট বাজারে আসলেও তারা ভালো দাম হাঁকছেন না।
তাই বেশি দাম পাট কিনে রাখার মতো সাহস পাচ্ছেন না প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। মিল মালিক ও বড় ব্যবসায়ীদের থেকে সাড়া পেলে তবেই পাটের দাম বাড়বে বলেও দাবি করেন তারা।
এদিকে খরার কারণে চাষিরা পাট জাগ দিতে না পারায় কোথাও কোথাও ক্ষেতেই পাট শুকিয়ে নষ্ট হয়েছে। যারা বাড়তি খরচের ধকল সামলে পাট জাগ দিয়ে সোনালি আঁশে স্বপ্ন বুনেছেন এখন তারাও হতাশ সিন্ডিকেটের মারপ্যাচে।
চলতি মৌসুমে পুরোদমে চলছে পাটকাটা ও আঁশ ছাড়ানোর কাজ। পাট মন্ত্রণালয় থেকে সার, বীজ, কীটনাশকসহ নানা সহযোগিতা দেওয়া হলেও রংপুরে দিন দিন কমে যাচ্ছে পাটের আবাদ।
স্থানীয় হাটগুলোতে পাটের দাম না থাকায় পুঁজি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। খরচের তুলনায় পাটের দাম না থাকায় পাট ছেড়ে তামাক ও ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
পাটচাষিরা বলছেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পাটের আবাদ করেছেন তারা। তবে উৎপাদিত পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা।
ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পাটের দাম কমানোর কারণে লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজার মনিটরিং করাসহ পাটে ভর্তুকি দিতে সরকারের সুনজর প্রয়োজন বলে মনে করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
প্রায় এক বিঘা জমিত পাট গাড়া (রোপন করা) থাকি শুরু করি ধোয়া পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা খরচ হইছে। এবার পাট পাইছি ছয় মণ। কিন্তু বাজারোত পাটের দাম পাই নাই।
প্রতিমণ ৮০০ টাকা থাকি ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম। ছয় মণ পাট আবাদ করতে ১০ হাজার টাকা খরচ নাগছে আর বিক্রি করছি অর্ধেক দামোত। এই বছর পাটোত মণপ্রতি হাজারের কাছাকাছি লস খাইছি বাহে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানির অভাবে সেচের মাধ্যমে পানি জমিয়ে সেখানে পাট জাগ দিচ্ছেন অনেকেই। এতে বাড়তি খরচের চাপ সইতে হচ্ছে। পাট জাগে হেরফের হলে এবং পরিষ্কার পানি না থাকলে মানসম্মত পাট পাওয়া সম্ভব হবে না।
এ কারণে কেউ কেউ বিকল্প উপায়ে সেচ সুবিধায় অথবা রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়া শেষে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করেছেন। বর্তমানে দামের হেরফের থাকলেও পাট নিয়ে ব্যবসায়ীদের গুদাম নয়তো হাটমুখী হচ্ছেন চাষিরা।
আগস্টের মাঝামাঝিতে মমিনপুর ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের কৃষক হরিশ চন্দ্র পাঁচ হাজার টাকা লোকসানে ছয় মণ পাট বিক্রি করেছেন। এবার লোকসান হওয়ায় আগামী বছর থেকে পাটের পরিবর্তে অন্য ফসল আবাদের কথা ভাবছেন এই কৃষক।
হরিশ চন্দ্র বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিত পাট গাড়া (রোপন করা) থাকি শুরু করি ধোয়া পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা খরচ হইছে। এবার পাট পাইছি ছয় মণ। কিন্তু বাজারোত পাটের দাম পাই নাই। প্রতিমণ ৮০০ টাকা থাকি ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম।
ছয় মণ পাট আবাদ করতে ১০ হাজার টাকা খরচ নাগছে আর বিক্রি করছি অর্ধেক দামোত। এই বছর পাটোত মণপ্রতি হাজারের কাছাকাছি লস খাইছি বাহে।’
মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ি সেরুডাঙ্গা বাজার এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন, এক সময় আমাদের এই গ্রামে পাটের খুব আবাদ হতো। এখন লোকসানের কারণে মানুষ পাট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
পাটে খরচ বেশি কিন্তু লাভ নেই। অনেকেই পাটের আবাদ না করে সরিষা, তামাক, ভুট্টাসহ শাক-সবজি আবাদ করছে। এগুলো চাষাবাদে লোকসানের সম্ভাবনা নেই।
একই কথা বলেন রংপুর মহানগরীর সরেয়ারতল এলাকার পাটচাষি জহুরুল ইসলাম। গনমাধ্যমকে এই কৃষক বলেন, পাট আবাদ করি আমরা লস খাচ্ছি।
একটা মানুষের একদিনের (দিনমজুর) মজুরির দাম ৬০০ টাকার নিচে নয়। অথচ পাটের দাম নেই। শাক-সবজি আবাদ করে লাভের আশা করা যায় কিন্তু পাটে শুধু হাহুতাশ। পাটের আগের অবস্থা ফেরাতে হলে বন্ধ পাটকলগুলো চালু করাসহ পাটের ব্যবহার বাড়াতে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
সদর উপজেলার পানবাজার গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, রিরোন রেটিং পদ্ধতিতে যন্ত্র দিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে পাট পচানো অত্যন্ত ঝামেলার কাজ।
পাটের বীজ বপন থেকে শুরু করে আঁশ ছাড়িয়ে ঘরে তোলা পর্যন্ত যেখানে সনাতন পদ্ধতিতে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক লাগে, সেখানে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে ২৫ থেকে ৩০ জন লাগে।
রিবন রেটিং পদ্ধতিতে এক বিঘায় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। আর সনাতন পদ্ধতিতে খরচ হয় মাত্র ১৩ হাজার টাকা। এত কিছু করার পরও মানুষ যদি পাটের ন্যায্য দাম না পায়, তাহলে কেন পাট চাষ করবে?
রংপুর জেলায় এবার পাট চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে। তীব্র তাপদাহ, অনাবৃষ্টি, রোদ এবং খরা থাকলেও বেশ কয়েকটি উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।
গত বছরের চেয়ে এবার রংপুর অঞ্চলে ৬২৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পীরগাছা উপজেলার পাওটানা হাটে গিয়ে দেখা যায়, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সুন্দরগঞ্জ ও উলিপুর উপজেলা থেকে অনেক পাটচাষি এসেছেন এই হাটে পাট বিক্রি করতে।
গত ২ সপ্তাহ আগে এই হাটে মানভেদে প্রতি মণ দেশি, তোষা এবং মেস্তা জাতের পাট ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মানভেদে সেই পাট বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার এই হাটে ৭০০ থেকে এক হাজার মণ পাট বিকিকিনি হয়ে থাকে।
হাটের মাঝখানে তপ্তরোদে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল সাজু ব্যস্ত পাটের ট্রলিবোঝাই করতে। এর ফাঁকে কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাটের বাজার বিগত কয়েকটি হাটের তুলনায় আজ নিম্নমুখী।
গত কয়েকটি হাটে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ১০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। সেই পাট আজকে প্রতি মণে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
এতে করে খুচরা ব্যবসায়ী ও পাটচাষিদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এভাবে পাটের বাজার নি¤œমুখী হলে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাজারে টিকে থাকতে পারব না।
গত বছর এই হাটে প্রতি মণ পাট টোসা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। এবার সেই দাম কমে আসাতে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থেকে আসা পাটচাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি। এর মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে পাটে খুব বেশি লোকসান হচ্ছে। পাটের দাম যদি প্রতি মণে ২ হাজার ৬০০ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে কৃষকরা লাভবান হতো।
পাটের দাম কম হওয়ায় বড় বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের পাশাপাশি সরকারকেও দুষছেন নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এই ব্যবসায়ী বলেন, দেশের বেশির ভাগ সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ রয়েছে।
আগের মতো এখন আর পাটের আমদানি-রপ্তানি নেই। সরকার নির্ধারিত কোনো মূল্য না থাকায় চাষিরা উৎপাদন খরচের তুলনায় পাটের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।
এ কারণে তারা পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। পাটের বস্তার ব্যবহার বাড়ানোসহ পাটজাত পণ্য সামগ্রীর ব্যবহার বাড়লে পাটের দাম কিছুটা হলেও বাড়বে।
দাম কমানোসহ সিন্ডিকেটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাট ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, মিল মালিকদের পাট কেনার আগ্রহ না থাকায় গত বছর বেশি দামে কিনে রাখা অনেক পাট ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুত রয়েছে।
এ বছর নতুন পাট বাজারে আসলেও তারা ভালো দাম হাঁকছেন না। তাই বেশি দাম পাট কিনে রাখার মতো সাহস পাচ্ছেন না প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। মিল মালিক ও বড় ব্যবসায়ীদের থেকে সাড়া পেলে তবেই পাটের দাম বাড়বে বলেও দাবি করেন তারা।
পাওটানার হাটে কথা হয় সুকুমার সরকার নামে এক পাট ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে পাটের ব্যবসা করছেন।
এই ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে তারা প্রতি মণ পাট জাত, মান ও রঙ ভেদে ১৮০০-২৪০০ টাকা দরে কিনছেন। বিদেশে পাট যাচ্ছে না তাই তারা পাট কিনে গুদামজাত করে রাখছেন।
কৃষকদের কাছ থেকে কেনা পাট তারা জুট মিলে বিক্রি করতে পারবেন কিনা তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ বড় বড় ব্যবসায়ী ও মালিকরা এক ধরনের সিন্ডিকেট করে পাট কিনে থাকেন।
এছাড়া পাটকল বন্ধ থাকাসহ সরকারের অনীহার কারণে এই খাতের সুদিন হারিয়ে যাচ্ছে। সোনালি পাটের আঁশ এখন চাষিদের কষ্ট বাড়িয়েছে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছর রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলা লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর ও নীলফামারীর ৫৩ হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
তবে কৃষকরা ৫২ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন। প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ২.৫৬ মেট্রিক টন। প্রায় ৭৫ হাজার কৃষক পাট চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
অন্যদিকে রংপুর জেলায় এবার পাট চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে। তীব্র তাপদাহ, অনাবৃষ্টি, রোদ এবং খরা থাকলেও বেশ কয়েকটি উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।
গত বছরের চেয়ে এবার রংপুর অঞ্চলে ৬২৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এদিকে উন্নত মানের বীজ সরবরাহের পাশাপাশি অনাবৃষ্টিতে পাট জাগ দেওয়ার দুশ্চিন্তা এড়াতে রিবোন রেটিং এবং ভালোমানের পাট চাষ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সরকারের কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন বলেন, পাট আবাদের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ কিছুটা কমে এসেছে।
কারণ পাট পচানোর জায়গা নেই। এখন পুকুর-জলাশয় মাছ চাষের আওতায় এসেছে। ফলে মাছ চাষ করা পুকুর-জলাশয়ে পাট পচানো সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া পাট যে মৌসুমে হয় ওই মৌসুমেই অন্য ফসলে তুলনামূলকভাবে বেশি আয় করা সম্ভব হয়। অনেকে লাভের হিসাব করে পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
পাটের ব্যবহার বা পাটজাত পণ্যের উৎপাদন সংকোচিত হয়ে আসছে বলে মনে করছেন এই কৃষিবিদ। তিনি বলেন, পাটের সুতা থেকে তৈরি পণ্যের আশানুরুপ ব্যবহার বাড়েনি।
এখনো কৃত্রিম ও প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য এবং ব্যাগের ব্যবহার রয়েছে। সেক্ষেত্রে পাটজাত পণ্যের বাজার প্রসারিত হয়নি বলা যায়। অন্যদিকে পাট চাষ থেকে শুরু করে পাট জাগ দেওয়া, বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা রয়েছে। কৃষকের প্রত্যাশানুযায়ী বাজারও স্থিতিশীল থাকে না। নানামুখী কারণে কৃষকেরা পাট চাষ থেকে বিমুখ হচ্ছেন।
কৃষিবিদ আফতাব হোসেন আরও বলেন, আমাদের সরকারের উদ্দেশ্যই হলো কৃষককে স্বাবলম্বী করা। কৃষকের আয় বৃদ্ধি করাসহ আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা।
সরকার পাটচাষিদেরও প্রণোদনা দিচ্ছে, যাতে নতুন জাতের পাটের চাষাবাদ বাড়ে। রবি-১ পাটের নতুন জাত। এর জন্য প্রণোদনা রয়েছে। তবে প্রাকৃতিক কারণে কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন বা ফসলের ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া হয়ে থাকে।
আরজেএন
