ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

বিষখালীর ভাঙনে বিলীন বৃদ্ধার ত্রাণের ঘর

বিষখালীর ভাঙনে বিলীন বৃদ্ধার ত্রাণের ঘর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝালকাঠির রাজাপুরের মঠবাড়ি ইউনিয়নের বাদুরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় বিষখালী নদীর আকস্মিক ভাঙনে বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে বিধবা দুধ মেহের বেগমের (৭০) ত্রাণের ঘর। এই ঘরটিই ছিল তাঁর একমাত্র আশ্রয়স্থল। বসতঘর হারিয়ে এখন তিনি অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েয়েছন। নদী ভাঙনের তৃতীয় দফায় এবার সবকিছু হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। 

বাবা মায়ের একমাত্র আদোরের সন্তান হিসেবে নাম রেখেছিলেন দুধ মেহের। স্বামী মারা গেছে অনেক আগেই। একমাত্র পুত্র সন্তান থাকেন ঝালকাঠি। স্বামীর বাড়ির জমিতে বসতিঘর দুইবার নদীতে ভেঙে গেছে। এবারে তৃতীয় দফায় ভাঙনে সব শেষ হয়ে গেছে তাঁর। এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। 

দুধ মেহের বলেন, নদীতেই সব কিছু ভাঙতে ভাঙতে শেষ হয়ে গেছে। স্বামীর বাড়ির জায়গা শেষ হলে নানা শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া জায়গায় খুপরি বানিয়ে থাকতাম। ২০০৭ সালের সিডরে তাও উড়িয়ে নিলে সরকার একটি ত্রাণের ঘর দেয়। দুইলাখ টাকার ঘরে থাকতে কিস্তি উঠিয়ে আরো দেড় লাখ টাকা খরচ করে বারান্দা দিয়ে বসবাস করছিলাম। 

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঘরের মধ্যে ঘুমে ছিলাম।  এলাকার লোকজনে চিল্লাচিল্লি করে আমার ঘুম ভাঙাইছে। আর বলছে বুড়ি তোমার ঘর গেছে, তুমিও ডুইবা যাবা। তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসো। এই হৈচৈ চিল্লাচিল্লি শুনে একটি কাঁথার বস্তা নিয়ে বের হইছি। আর কিছু পাইনাই, সব শেষ হয়ে গেছে। ঘটনা শুনে ঝালকাঠি শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছেলে মানিক ছুটে আসলেও কিছু ডাল-চাল ও শুকনা খাবার দিয়ে চলে গেছে। 

স্থানীয় হাসি বেগম বলেন, ৩০ বছর ধরে এই এলাকায় স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছি। সেই থেকেই দেখতেছি নদী ভাঙতে ভাঙতে দুই কিলোমিটারের বেশি ঢুকেছে। বেরিবাধ না থাকায় ভাঙন ও পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে যায়। দুধ মেহেরের ঘর যেসময় ভাঙছে, ওই সময় প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত ভেঙে যায়। ঘর ভাঙার কড়কড় শব্দ শুনে আমরা গ্রামবাসী দৌঁড়ে এসে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অন্য কোন মালামাল আর রাখতে পারিনি। 

মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, বিষখালী নদীর ভাঙনে বাদুরতলা এলাকার বৃদ্ধার ঘর ও মল্লিক বাড়ি এলাকার রাস্তাসহ গাছ-পালা বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে নদী ভাঙন রক্ষায় বারবারই আবেদন জানিয়েছি। কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও নদীর পানি বৃদ্ধিতে ভয়াবহভাবে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিলীন হয়েছে বসতি ঘর, গাছপালা, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাটসহ আবাসিক এলাকা। 

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম নিলয় পাশা বলেন, নদী ভাঙন রোধে ৮৫৫  কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই প্রকল্প গৃহীত হলে নদী ভাঙনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন