ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

Motobad news

মাঠে নামছেন ফ্রান্সের গতিবারুদ এমবাপ্পে

মাঠে নামছেন ফ্রান্সের গতিবারুদ এমবাপ্পে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সবার চোখ মেসি-নেইমার-রোনালদোতে। অথচ এমবাপ্পে যে তাদের পেছনে ফেলে ছুটছেন সে খবর কি আছে? বয়স মাত্র ২৩ অথচ বিশ্বকাপে নিজের নামের পাশে ৭ গোল বসিয়ে ফেলেছেন। এই আসরে ইতিমধ্যে ৩ গোল নিয়ে সেরা স্কোরারও। বিশ্বকাপও জিতেছেন ওই ছোট বয়সেই। কিন্তু বয়সটা কাঁচা বলে ভুলও আছে এমবাপ্পের।

পিএসজি তারকার ভুলেই গত ইউরো থেকে শেষ ১৬-তেই বিদায় নিয়েছিল ফ্রান্স। পোল্যান্ডের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে আবারও শেষ ১৬ ফ্রান্স ও এমবাপ্পের সামনে। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের প্রায়শ্চিত্ত এবার করতে হবে এই ফরোয়ার্ডকে।

চার বছর আগে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করাদের একজন হয়ে যান এমবাপ্পে। তাও কিশোর বয়সে একমাত্র ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পর। বিশ্বকাপে যে কাজটি করে দেখাতে পরেননি মেসি-রোনালদো।  নেইমার তো তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলছেন। তার সামনে সুযোগ আছে। এবার নেইমারকে পেছনে ফেলেই এগিয়েছেন এমবাপ্পে। ডেনমার্কের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে জোড়া গোল করে মোট ৭ গোল পূর্ণ করেন। বিশ্বকাপে নেইমারের ৬ গোল। এখন ৭ গোল নিয়ে লুইস সুয়ারেজের পাশে এমবাপ্পে। এরপরই মেসি ও রোনালদো দুজন।

পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১ গোল পিএসজি ফরোয়ার্ডকে বিশ্বের সেরা দুজনের পাশে রাখবে। আর এক গোল তাদের টপকে এগিয়েও দেবে। নিশ্চিতভাবেই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলস্কোরার মিরোস্লোভ ক্লোসার ১৬ গোলের রেকর্ড ভাঙার যোগ্যতা শুধু এমবাপ্পেতেই আছে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে বিশ্রামে ছিলেন। বদলি হয়ে নেমেও গোল পেয়েই যাচ্ছিলেন প্রায়। এমন ছুটন্ত পারফরমারকে পোল্যান্ড রুখবে কী করে।

পিএসজিতে মেসি ও নেইমারের ছায়ার নিচে পড়ে থাকেন বলে নিজের আসল খেলাটা দেখাতে পারেননি অনেক সময়। তবে বিশ্বকাপে এমবাপ্পের সেই সমস্যা নেই। আসরের আগে ফ্রান্সের এক নম্বর নাম্বার নাইন করিম বেনজেমা ইনজুরিতে পড়ায় পুরো লাইমলাইট চলে আসে এমবাপ্পের ওপর। এখন একক রাজত্বে বেশ সফলও হচ্ছেন। তাই তরুণ এই স্ট্রাইকারের ওপরই ফ্রান্সের মূল ভরসা। পেলে যেমন ১৯৬২-তে শেষবার টানা বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব ব্রাজিলকে এনে দিয়েছেন, এমবাপ্পেও এবার তা করে দেখাবেন!

কোচ দিদিয়ের দেশমের বিশ্বকাপ এমবাপ্পের সেই যোগ্যতা হয়েছে। গত বিশ্বকাপের এমবাপ্পের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে কোচ বলেন, ‘পিএসজির বিষয় নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই। সেখানে ভালো করা বা ফ্রান্সের করিমের সঙ্গে তুলনা এসব ওর মাথায় নেই। ওর মধ্যে অহং নেই। ওর পারফরম্যান্সই ওকে কেন্দ্রে নিয়ে আসে। সে এখন আর ১৮ বছরের না। অনেকটাই অভিজ্ঞ। অবশ্যই সে এই বিশ্বকাপে আমাদের মূল ফুটবলার।’

 শুধু বিশ্বকাপের গোলের দিক থেকেই নয়। এই তরুণ বয়সেই ফ্রান্স কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানকেও গোলের দিক থেকে ছুঁয়ে ফেলেছেন এমবাপ্পে। ১০৬ ম্যাচ খেলা জিদানের গোল সংখ্যা ৩১টি। এমবাপ্পে মাত্র ৬১ ম্যাচে এই সংখ্যা ছুঁয়েছেন। তাই দেশম সবাইকে এমবাপ্পের বয়স নিয়ে আর কথা না বলার অনুরোধ করেন, ‘আপনারা দেখবেন সে ফ্রান্স গ্রেটদের পেছনে ফেলেছে। এখন সে জিদানের পাশে। গোলের দিক থেকে এইসব কিন্তু বিরাট অর্জন। এত ছোট বয়সেই সে এই অর্জনগুলো পেয়েছে। যেহেতু এই পর্যন্ত এসেছে তাই ওর যথেষ্ট পরিপক্বতাও হয়েছে। তাই ওর বয়স নিয়ে আর কথা না বলাই ভালো।’

১৯৮২ বিশ্বকাপের পর ফ্রান্স-পোল্যান্ড এই প্রথম কোনো বিশ্বকাপ মঞ্চে মুখোমুখি হচ্ছে। এই ম্যাচে এমবাপ্পে যে ফলাফলে বিরাট ভূমিকা রাখবেন তা বিশ্বাস করেন অপর ফরোয়ার্ড অ্যান্তোইন গ্রিজমানও।

তরুণ সতীর্থকে ধরাছোঁয়ার বাইরে উল্লেখ করে গ্রিজমান বলেন, ‘২০১৮ সালে সে যেমন ছিল এখন সেই একই এমবাপ্পে নেই। খুব বড়ভাবেই সে এখন দলের অংশ। সবার সঙ্গে কথা বলে, মজা করে। সে জানে মিডিয়া, সমর্থক এমনকি আমরাও তার দিকে তাকিয়ে। সে যা করবে সব কিছুই ধরা পড়বে কিন্তু আমি বলব এমবাপ্পে ধরাছোঁয়ার বাইরে।’

ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এমবাপ্পে সত্যিকার গোলাবারুদ। বল পায়ে পড়লেই তার ডান প্রান্ত দিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়া এবং মুহূর্তেই অদৃশ্য শট নেওয়া যে কোনো দলের জন্যই বিপদ। আজ সেই বিপদে পড়তে যাচ্ছে পোল্যান্ড।


এএজে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন