দক্ষিণাঞ্চলের ‘মলম পার্টির’ প্রধান যুবদল নেতা রুহুল আটক


ঝালকাঠি-ঢাকা রুটে চলাচলকারী লঞ্চে প্রায়ই মলম পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন যাত্রীরা। বিষক্রিয়ায় অনেকের জীবনও সংকটাপন্নে। সেই মলম পার্টি চক্রের প্রধান রফিকুল ইসলাম ওরফে রুহুল আমিন মৃধাকে (৪৫) জনতা হাতেনাতে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে যাত্রীদের নেশাজাতীয়দ্রব্য ব্যবহার করে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মলম পার্টির প্রধান।
পুলিশের হাতে আটক হওয়া রফিকুল ইসলাম বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। সে বরিশাল মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ আলেকান্দার শিকদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতকারী লঞ্চে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১২ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ফারহান ৭ লঞ্চে যাত্রী হয়ে আসছিলেন শহরের বাসিন্দা কাজী ইউসুফ আলী ও তাঁর ছেলে কাজী বশির উদ্দিন। গভীর রাতে কাজী বশিরকে নেশাজাতীয়দ্রব্য ব্যবহার করে অচেতন করেন মলম পার্টি চক্রের প্রধান রফিকুল ইসলাম ওরফে রুহুল আমিন মৃধা। তাঁর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা লুটে নেওয়া হয়। ছেলের এ অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিক চিৎকার শুরু করেন বাবা কাজী ইউসুফ আলী। এ সময় পাশের যাত্রীরা এসে রফিকুল ইসলাম ওরফে রুহুল আমিন মৃধাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। যাত্রীদের কাছে সে মলম পার্টির নেতা বলেও স্বীকার করে। পরে যাত্রীরা পুলিশকে খবর দেয়। ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক মো. সালাহউদ্দিন ১৩ আগস্ট সকালে লঞ্চঘাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রতারণার শিকার কাজী বশিরকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার কাজী বশিরের বাবা কাজী ইউসুফ আলী বাদী হয়ে ১৩ আগস্ট ঝালকাঠি থানায় মামলা করেন।
কাজী বশির বলেন, লঞ্চে ঢাকা থেকে ঝালকাঠি আসার সময় আমার পাশে বসা ছিলেন রুহুল আমিন নামে ওই ব্যক্তি। আমার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করেন। রাত গভীর হলে তিনি নেশাজাতীয়দ্রব্য ব্যবহার করে আমাকে অচেত করেন। আমার পকেট থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীরা তাকে আটক করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল শিকদারপাড়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, রফিকুল ইসলাম ওরফে রুহুল আমিন মৃধা বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে থাকেন। রাতে তিনি দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চে যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে একাধিক ব্যক্তি। তিনি ওই চক্রের প্রধান।
ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, যাত্রীরা এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সে পুলিশের কাছে মলম পার্টির প্রধান বলে স্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে বিষপ্রয়োগ করে টাকা চুরির মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম তছলিম উদ্দিন বলেন, রুহুল আমিন নামে একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন। তিনি ১৫-২০ দিন আগে একটি কর্মসূচিতে এসেছিলেন। এর পর থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।
এইচকেআর
