ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

Motobad news

আমতলীতে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

আমতলীতে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার তালতলী উপজেলার তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষের ভিতরে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে ক্লাস করতে হয়। টিনের চালা দিয়ে পড়া বৃষ্টির পানিতে ধীরে ধীরে শ্রেণি কক্ষগুলো ভরে যায়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। 

বিদ্যালয়টি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১১ সালে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমিপাকা টিনসেট ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। ওই ভবনের একটি কক্ষ শিক্ষকদের অফিস কাম লাইব্রেরী হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বাকী ৫টি কক্ষে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে জরাজীর্ণ পুরাতন ওই সেমিপাকা টিনসেড ভবনের ৬টি রুমই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্য কোন শ্রেণি কক্ষ না থাকায় বাধ্যহয়েই ওই জরাজীর্ণ ভবনের কক্ষে ক্লাস নিচ্ছেন বলে শিক্ষকরা জানান । 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বাহিরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এরমধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছেন। এ সময় ওই পুরাতন আধাপাকা জরাজীর্ণ টিনসেড ভবনের ষষ্ঠ শ্রেণীর কক্ষে ঢুকে দেখা যায়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মাথায় ছাতা দিয়ে বসে ক্লাস করছেন। পুরাতন টিনের চালা দিয়ে অনবরত বৃষ্টির পানি শ্রেণী কক্ষে পড়তেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রেণী কক্ষগুলো বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। একই অবস্থা অন্যান্য শ্রেণী কক্ষ গুলোতেও।

ষষ্ঠ শ্রেণির নাঈম, রোমান, আরাফাত ও সোহাগীসহ অনেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের টিনের চাল ফুটো থাকার কারণে শ্রেণি কক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ায় আমাদের ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হয়। ছাতা মাথায় দেয়ার পড়েও পানি পড়ে আমাদের বই খাতা ও পোশাক ভিজে যায়। এরপরেও আমরা বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করছি।

সপ্তম থেকে দশম শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়টিতে ঝড় বৃষ্টির ও জরাজীর্ণ ওই পুরাতন শ্রেণি কক্ষের মধ্যে আমাদের পাঠদান নিতে হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমাদের ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করকে হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে নতুন একটি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় কর্তৃপক্ষ পুরাতন ভবনটির মেরামত বা সংস্কার করতে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আর ঠিকাদারও কাজ ফেলে রেখেছেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মল্লিকা রত্না বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনের চালা দিয়ে পানি পড়ায় আমরা বৃষ্টিতে কক্ষের মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ের পুরাতন আধাপাকা টিনসেট ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। গত তিন চার বছর থেকেই ভবনটির বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই চাল থেকে পানি পড়ে ক্লাসের ভিতর জমা হয়ে যায়। তখন শিক্ষক ও  শিক্ষার্থীদের ছাতা মাথায় দিয়ে বসে ক্লাস করতে হয়। বই খাতাসহ নিজেরা যেন ভিজে না যায় সেজন্য অদ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে ছাতা নিয়ে আসতে বলা হয়। তিনি আরো বলেন, পুরাতন সেমিপাকা টিনসেড ভবনটির সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও এখনও কোন সুফল পাইনি। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ক্লাস করছেন। 

উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, খবর পেয়ে আজ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করি। ওই বিদ্যালয়ের যে আধাপাকা টিনসেট ভবনে বসে পাঠদান করানো হচ্ছে সেটি অনেক পুরানো ও জরাজীর্ণ। ওই বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান আছে। যতদ্রুত সম্ভব নির্মাণ কাজ শেষ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর জরাজীর্ণ ও আধা সেমিপাকা টিনসেট ভবনের কক্ষগুলো দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। 


 
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন