পটুয়াখালীতে তিন চাকার ৬৩ শতাংশ যান অবৈধ


সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছেন আদালত এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এর পরও ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালী অংশে অবাধে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র ও ট্রলি। শুধু পৌর এলাকায়ই এ ধরনের অন্তত ৬৩ শতাংশের বেশি যানবাহন আবার অনিবন্ধিত। শহরের বাইরে ও উপজেলায় এ সংখ্যা আরও বেশি।
এসব যানবাহনের কারণে দ্রুতগামী বড় যানবাহনগুলোকে চলতে হচ্ছে ধীরগতিতে। পদ্মা সেতু চালুর পর এমন যানবাহন আরও বেড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পটুয়াখালী পৌরসভা সূত্র জানায়, শহরে নিবন্ধিত তিন চাকার যানবাহন রয়েছে প্রায় ৪ হাজার। এর বাইরে চলাচল করছে আরও ৭ হাজার যানবাহন। অটোরিকশা ও অটোবাইক সমিতি বলছে, পুরো জেলায় এ ধরনের যানবাহন চলাচল করছে লক্ষাধিক।
এর অধিকাংশের কোনো নিবন্ধন নেই। কলাপাড়ায় ২২০, গলাচিপায় ৬৮০ ও কুয়াকাটায় ১৪০টির নিবন্ধন রয়েছে। তিন উপজেলায় এক হাজার ৪০টি তিন চাকার যানের নিবন্ধন আছে। আরও ৬০০ যানবাহনের নিবন্ধন দেবে কলাপাড়া পৌরসভা।
জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা-কুয়াকাটা-পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কে দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনের প্রাণ গেছে।
সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ জুলাই। এ দিন দুটি দুর্ঘটনায় শহিদুল ইসলাম রানা ও ব্যাংকার মো. সাইফুল ইসলাম নিহত হন। ২০ জুলাই বাকেরগঞ্জে বাস ও ইজিবাইকের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হন। ১৬ জুলাই আমতলীতে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মো. রিয়াদ হোসেন।
৩১ মে আমতলীতে ট্রলি-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ হারান মো. নূরুল ইসলাম। ১২ মার্চ দুমকীতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত হন চারজন। ১১ মার্চ কলাপাড়ার নীলগঞ্জে বাসচাপায় নিহত হন সাংবাদিক মো. হাসান পারভেজ। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী তিন চাকার যান। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় প্রতিদিনই নতুন নতুন বিলাসবহুল বাসের সঙ্গে এ ধরনের তিন চাকার যানও রাস্তায় নামছে।
সাকুরা পরিবহনের চালক মো. মনির হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ফেরির যন্ত্রণা শেষ হলেও তিন চাকার যানের যন্ত্রণা রয়ে গেছে।
জেলা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অটোবাইক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন তালুকদার বলেন, আগে ৬০টি গাড়ি জেলা শহরের আশপাশে চলাচল করত।
জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, তিন চাকার যান তুলে দিলে তাঁরা গাড়ি চালাবেন কোথায়?
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, পদ্মা সেতু চালুর কারণে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ জন্য তিন চাকার যান তুলে দেওয়া প্রয়োজন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার যান চলতে দেওয়া হবে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এইচকেআর
