ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

বাস শ্রমিকদের হামলায় শিশুসহ আহত ৪ 

 বাস শ্রমিকদের হামলায় শিশুসহ আহত ৪ 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় এক পরিবারের চারজনকে মারধর করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে শিশুসহ  ৪ জন আহত হয়েছ । 

আহতরা হলো,মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে শামীম সিকদার (২৭)। তার মা হাসনুর বেগম, ভাগনে বউ কারিমা ও কারিমার সাত বছরের মেয়ে মুনিয়া। শুক্রবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। 

এ সময় মারধরের শিকার ওই পরিবারের সঙ্গে থাকা ৭ বছরের এক শিশুকে জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি বাসস্ট্যান্ডে হলেও যাত্রীদের শ্রমিকরা মারধর করেছেন স্ট্যান্ডের বাইরের সড়কে। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরা। 

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, তাদের কাছে বরিশালবাসী একধরনের জিম্মি। এ ঘটনার বিষয়ে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতাদের জানাতে পারব, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিতে পারব না। 

ব্যবস্থা নিলে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি রূপাতলী থেকে বাস সরিয়ে নিয়ে কালিজিরা স্ট্যান্ড করে। 

আহত শামীম বলেন, নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কালিজিরা এলাকার  আলমঘীর তালুকদারের ভাড়াটিয়া হলেও  তাদের  মূল বাড়ি মঠবাড়িয়ায়। তিনি পেশায় পাথর শ্রমিক । ছুটি নিয়ে শুক্রবার গ্রামের বাড়ী মঠবাড়িয়া যাচ্ছিলেন তারা। তিনি বলেন, সাধারণ সময়ে বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়ায় ভাড়া দেড় শ টাকা করে। কিন্তু করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। 

আমরা চারজনই ২৪০ টাকা করে টিকিট নিয়ে সিটে বসেছি। তিনি বলেন, নিয়ম হচ্ছে, এক সিট খালি রাখা। কিন্তু ওই বাসটির সুপারভাইজার এক সিট তো ফাঁকা রাখছেনই না বরং যাত্রী তুলছেন দাঁড়া করিয়ে নেওয়ার জন্য। আমি এর প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ বাসস্ট্যান্ডের ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক মিলে বাসের সিটেই আমাকে মারধর করেন। 

আমাকে বাঁচাতে গেলে শ্রমিকরা আমার মা, ভাগনে বউ কারিমাকে মারধর করে। 

শামীম বলেন, শুধু আমাদের মারধর করছে সেটাই নয়, আমার ভাগনের সাত বছরের মেয়ে মুনিয়াকে জানালা থেকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মাহিম পরিবহনের (গাড়ি নং ঢাকা মেট্রো ব-১৪৪৯৯৮) সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে ব্যাপক মারধর করা হয়। যাত্রী মারধরে শুধু ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাই নন, রূপাতলী বাস মালিক সমিতির শ্রমকিরাও অংশ নেন। 

ওই যাত্রীকে সপরিবার মারধরের পর বাসটি স্ট্যান্ড ছেড়ে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

শুধু মাহিম পরিবহন নয়, বরিশালের অভ্যন্তরীণ সব রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। 

প্রশাসনিক কোনো নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এভাবে যাত্রী পরবিহন করছেন। এর প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের মারধর করা হয়। 

এ বিষয়ে ঝালকাঠী মালিক সমিতির রূপাতলীতে দায়িত্বে থাকা  লাইন বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন শামীম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি এবং মারধরের শিকার যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। অভিযুক্ত বাস সুপার ভাইজার ও হেলপারকে নামিয়ে দেয়াসহ বাসটিকে অনিদিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ডে রাখা হয়েছে । 
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন