ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

Motobad news

বরগুনার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

বরগুনার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনা জেলার এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। ইমরান হোসেন (টিটু) নামের ওই সাংবাদিক একাত্তর টিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি ও রাইজিং বিডি ডটকমের বরগুনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও ইমরান হোসেন (টিটু) বরগুনা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। 

জানা যায়, চলতি বছরের গত ১ মার্চ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজারের দূর্নীতি নিয়ে ইমরান হোসেন টিটুর অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রচার হয় একাত্তর টেলিভিশনে। প্রতিবেদনটি করার কালীন সময়ে মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মল্লিক এর ভাগিনা বাদল ওরফে বাক্স বাদল প্রতিবেদনটি না করার জন্য একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা অফিসে এসে  ঘুষ দিতে চায় ইমরান হোসেন টিটুকে। পরে ঘুষ দিতে চাওয়ার ভিডিওসহ প্রতিবেদনটি একাত্তর টিভিতে প্রচার হলে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে এদের বিরদ্ধে।

এরপর এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন বাদল। বিষয়টি শুক্রবার (২২ জুলাই) রাতে জানাজানি হলে তীব্র নিন্দার ঝর ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একইসাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়।

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ফসল বলেন, একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক ইমরান হোসেন টিটুকে হয়রানি করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই মামলা করা হয়েছে। এর আগেও এই সাংবাদিক বিভিন্ন দূর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন সাধারণ মানুষের সামনে। মামলা করে কখনোই সাংবাদিকদের লেখা বন্ধ করা যায়নি,আর ভবিষ্যতেও যাবে না। সাংবাদিকরা অনিয়ম, দূর্নীতি ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা রেখে যাবেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সরকার শিগগিরই এ আইন বাতিল করবেন বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি, রাইজিং বিডির জেলা প্রতিনিধি ও বরগুনার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান হোসেন টিটু বলেন, প্রতিবেদন করার সময় বাদল নামে একজন গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে আমার বরগুনা অফিসে আমার সাথে দেখা করতে আসেন এবং এ সময়ে তিনি এই দুর্নীতির প্রতিবেদনটি বন্ধ করার জন্য ঘুষের প্রস্তাব দেন আমাকে। এসময় আমি এসব কথোপকথন ভিডিও রেকর্ড করে প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত করে প্রচার করি। এবং এর একমাস পরে বাদল বাদী হয়ে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি  মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি যেকোন উপায়ে তারা ধামাচাপা দিয়ে রাখে এতদিন যাবত। গতকাল রাতে আমি একটি সূত্রের মাধ্যমে মামলার বিষয়ে জানতে পারি। এরপর আমি সাইবার ট্রাইবুনালে খোঁজ নিয়ে মামলার সত্যতা জানতে পারি। 

তিনি আরও বলেন, এই বাদল আমাকে এই মির্জাগঞ্জ ইয়ার উদ্দিন খলিফা সাহেবের দরবারের দুর্নীতির  প্রতিবেদন বন্ধ করার জন্য ঘুষ দিতে চেয়েছে, আমি ঘুষ না নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করি। এটা কি আমার অন্যায়? তিনি ঘুষ দিতে চেয়েছেন এটা কি অন্যায় নয়? আমি তদন্তকারী পুলিশ প্রশাসন মহামান্য আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। আমি আশা করি পুলিশ সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে এবং এই মামলা থেকে আমি মুক্তি পাবো। তবে এতে আমার অনেক বাধা পার হতে হবে। মির্জাগঞ্জ ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজার থেকে অনেক কথিত সাংবাদিকরা মাসোয়ারা নিয়ে থাকে। এর আগেও আমি বরগুনার অনেক দুর্নীতির বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করেছি। সেসব প্রতিবেদন যাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে তারা সবাই একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। যেকোনো উপায়ে আমাকে বন্দী করার ফন্দি আটছেন তারা সকলে।


এএজে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন