ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

আটঘর-কুড়িয়ানা ভ্রমণে মনোহর একদিন

আটঘর-কুড়িয়ানা ভ্রমণে মনোহর একদিন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

জাহিদ আহনাফ 


ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে ঐতিহ্যবাহী আটঘর পেয়ারা বাগান খুবই জনপ্রিয়। বর্ষার শুরুতেই পর্যটকদের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে জমে উঠে এই আটঘর।

পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি থানার অন্তর্গত আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের আটঘর গ্রামে অবস্থিত। অনেকের কাছে পিরোজপুরের পেয়ারা বাগান নামে পরিচিত। 

এখানে পর্যটকদের ভ্রমণের  প্রধান বাহন নৌকা ও ট্রলার। এখানে রয়েছে প্রায় ৮০ টি নৌকা ও ৬০টি ট্রলার। সন্ধ্যা নদীর এই শাখা নদীতে হাজারও পর্যটক নৌকায় কিংবা ট্রলারে তাদের ভ্রমণ পিপাসা মিটায়।  এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাসমান  বাজার। এটি 'ভীমরুলী হাট' বা ভীমরুলী পেয়ারা বাজার নামেও পরিচিত। এই বাজার  প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত বসে। 
 
দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে মনোমুগ্ধকর পার্ক। পার্কগুলোর আসবাবপত্রগুলো বাশঁ ও কাঠের তৈরি। যা পর্যটকদের খুব সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। মন চাইবে একটু বসি, কিছুটা সময় থাকি এই সৌন্দর্যের মধ্যে। পার্কগুলোর মধ্যে গিয়ে যেকোনো পর্যটক তাদের ইচ্ছেমত পেয়ারা পেড়ে খেতে পারবে (অনুমতি সাপেক্ষে)। নিজের হাতে পেয়ারা পেড়ে খাওয়ার স্বাদ অন্যরকম। তাছাড়া পর্যটকদের  বিশ্রামের জন্য  বাশেঁর তৈরি ঐসব আসবাবপত্রে বসে পর্যটকরা স্বর্গীয় শান্তি  নিতে পারবে। 

আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের একঝাক শিক্ষার্থী ছুটির দিনটিকে উপভোগ করার জন্য আটঘর কুড়িয়ানা পেয়ারা বাগানের উদ্দেশ্য রওনা হই। সকাল ১০ টায় আমরা চৌমাথা থেকে লেগুনায় করে আটঘর বাজারে গিয়ে নামি। তারপর সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে পেয়ারা বাগান দেখতে রওনা হই। আমরা এগারোজন ছিলাম। তাই বড় একটা নৌকা ভাড়া নেই। এরপর আমরা পেয়ারা বাগানের দিকে রওনা হই।

সন্ধ্যা নদীর শাখা হয়ে নৌকা সামনের দিকে এগোচ্ছে। আমরা সবাই পেয়ারা বাগান দেখার জন্য অধির আগ্রহে বসে....। নৌকায় বসেই আমরা পেয়ার বাগান দেখি। ছোট ছোট খাল। দু’পাশে সারি সারি পেয়ারাগাছ। কাঁচা-পাকা টসটসে পেয়ারা ঝুলে আছে। কোনটা পাকা, কোনটা কাঁচা। হলুদ আর সবুজের মনকাড়া সমারহ। গাছের তলায়ও বেশ কিছু পেয়ারা। 

নৌকায় যেতে পেয়ারার মৃদু ছোঁয়া লাগবে। ইচ্ছে হচ্ছিল পুরো বাগানটাই তুলে নিই। পেয়ারা বাগানের মধ্যে সবজির আবাদ। বিভিন্ন রকম সবজি ঝুলে আছে। শসা, বেগুন, করলা আরো কত কী.... কোথাও ছোট ছোট আখ চোখে পড়ল। তবে আমরা সকালে বসা ভাসমান বাজারটা মিস করি। 

আমাদেরকে পুরো পেয়ারার স্বর্গরাজ্য ঘুড়িয়ে দেখিয়েছেন মাঝি  শামিম মিয়া। তিনি বেশ রসিক ছিলেন। তিনি  বলছিলেন, এইহ্যানে পর্যটক আসে ঘুরতে। হ্যারা তো চিনে না সবজায়গা। হ্যাগো সময় বেশি দিলে খুশি হয়। মোগোও ভালো লাগে। ট্যাহার মধ্যেই তো সব নাহ। আর এই হানে পেয়ারার বাগানে অনেক লোক আসে। ভালো কামাই হয়।

অপূর্ণ স্বাদের পূর্ণতা
শুধু পেয়ারার বাগান দেখলেই কি মনের স্বাদ মিটে। কিছুটা অপূর্ণতা যেন থেকেই যায়। কিন্তু এই পেয়ারার বাগান আপনার সাধ অপূর্ণ রাখবে নাহ। আপনাকে তৃপ্তি চূড়ায় পৌছায় দিবে। কারন এখানে রয়েছে বিশাল আমড়ার বাগান। সারি সারি আমড়া গাছ আর তাতে আমড়া দেখে আপনি মুগ্ধ হবেন। আপনার মন চাইবে আমড়ার বাগান কিনে সারাদিন এখানে কাটাতে। আর সুপারির বাগানে আকাশ ছোয়া সুপারির গাছ আপনার চোখ রাঙিয়ে দিবে। মনে হবে সুপারি গাছে উঠলেই আমি আকাশ ছুঁইতে পারবো। আকাশ ছুঁইতে গিয়ে আপনি লেবুর রাজ্যে হারিয়ে যাবেন। লেবুর বাগান আপনার ভ্রমনকে আরো প্রানবন্ত করে তুলবে।


এসএমএইচ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন