নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বিপৎসীমার উপরে পানি

পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে উপকূলীয় বরগুনার প্রায় নদ-নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর পানি বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে বরগুনার বড়ইতলা ও পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় দেখা যায়, উচ্চ জোয়ারে ডুবে আছে ফেরির দুইটি গ্যাংওয়ে। যানবাহনের চালক, যাত্রী ও সাধারণ মানুষরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
এছাড়া খাকদোন, হরিনঘাটা, টিয়াখালী নদী, বগীরখাল, বেহুলা নদী, নিদ্রাখাল সহ জেলার প্রধান নদী ও খাল সংলগ্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলোতে অতিরিক্ত জোয়ারে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। কিছু কিছু এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পানি বন্দি হয়ে আছে লক্ষাধিক মানুষ। এমনকি বরগুনা পৌর বাজার ও এর আশপাশের এলাকার নিম্নাঞ্চলও দিনে দুই বার করে প্লাবিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাথরঘাটায় ১০টি গ্রাম উচ্চ জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া তালতলী উপজেলায় জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ভেঙে ৮টি গ্রাম এবং কমপক্ষে ৫০টি মাছের ঘের প্লাবিত রয়েছে। এতে চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে ঘর ডুবে যাওয়ায় রান্না বন্ধ হয়ে গেছে এসব এলাকার মানুষের।
স্থানীয়রা জানান, তালতলীতে জোয়ারের পানির তোড়ে একাধিক স্থাপনা ও বসত ঘর ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমনের বীজতলা নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এভাবে বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকলে দিনে-রাতে অন্তত দুইবার পানিতে তলিয়ে থাকবে ৮ গ্রাম। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এসব গ্রামের লোকজন।
এদিকে, এলাকাবাসীকে ভাঙা বাঁধ দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম সাদিক তানভীর। বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী জেলায় বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৩০০টি প্রাকৃতিক খাল রয়েছে। এ জেলায় মোট ১৬০ বর্গ কিলোমিটার নদী রয়েছে, যা জেলার মোট আয়তনের ২২ ভাগ।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক মাহাতাব হোসেন জানান, বরগুনার নদ নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।
এএজে
