ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

Motobad news

এক টুকরো মাংসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা!

এক টুকরো মাংসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা!
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ভেতরে গরু জবাই থেকে শুরু করে আনুসাঙ্গিক কাজের ব্যস্ততা। কাটাকাটি শেষ হলেই খুলে যাবে গেট, মিলবে এক টুকরো করে মাংস।

সেই আশায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন বৃদ্ধ -বৃদ্ধা, শিশু, প্রতিবন্ধী সবাই। সকাল থেকেই অপেক্ষায় আছেন তারা, কখন গেট খুলবে, মিলবে মাংসের টুকরা। গ্রামসহ দূর দূরান্ত থেকে  শহরে কোরবানির মাংস নিতে আসা এসব মানুষ দীর্ঘ লাইন দিয়ে অপেক্ষায় করছেন। এমন চিত্র দেখা গেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মরহুম সংসদ  সদস্য গোলাম সবুর টুলুর বাস ভবনের গেটে। এ চিত্র শুধু ওই বাড়ির সামনেই নয়, গ্রাম এবং শহরের প্রতিটি বিত্তবানের ঘরে ঘরে গরিবরা এক টুকরো মাংসের জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

রোববার (১০ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। কোরবানির ঈদ দিন সকাল থেকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মাংসের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গরীব লোকজন।

পাথরঘাটা পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডে কলেজ গেট সংলগ্ন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি সুলতানা নাদিরা ও বরগুনা-২ আসনের  প্রয়াত এমপি গোলাম সবুর টুলুর বাসভবনের সামনে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কোরবানির মাংস দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

গেটে অপেক্ষমান জাহানারা, মমতাজ বেগম, আব্দুর রহিম, শাহজাহানসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, আমরা গরিব মানুষ, আমাদের ওপর কোরবানি ফরজ তো হয়নি।   তারপরও এক কেজি মাংস কেনার ভাগ্য আমাদের নেই। তাই অন্তত বিত্তবানদের কাছে এসে যদি কোনো মাংস পাই  তা দিয়ে সন্তানদের নিয়ে এক বেলা খাব।

তারা আরও বলেন, অন্তত কোরবানির ঈদের দিন একবেলা সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।

গেটে অপেক্ষায় থাকা ৭০ বছরের জাহানারা বেগম বলেন, বাড়ির ভেতর কেবল মাংস কাটাকাটির কাজ চলছে। তাই খোলা হচ্ছে না ধনীদের বাড়ির ফটক। ছোট গেটের সামনে একজন দাঁড়িয়ে আছেন, যাতে বাইরের কেউ ঢুকতে না পারে। কাটাকাটি শেষ হলেই গেট খুলে বাইরে অপেক্ষমাণদের মাংস দেওয়া হবে।

কালমেঘের ইউনিয়ন থেকে আসা সালেহা বেগম জানান, তাদের গ্রামে কোরবানি দেন খুব কম মানুষ। তাই গ্রাম থেকে যেটুকু মাংস পাওয়া যায় তা দিয়ে একবেলাও ঠিক করে রান্না হয় না। সে কারণে সকাল ৭টা থেকে মুখ চেয়ে আছেন ধনীদের।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সকাল থেকেই গেটে অপেক্ষা করছি। প্রতি বছর এখান থেকে মাংস পাই, তাই আসছি। যা পাই তা দিয়ে পোলাপানের মুখে দিতে পারি।

সাংসদ সুলতানা নাদিরার ব্যক্তিগত সহকারী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কোরবানির দিন অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে ৫টি গরু  ও ৬ টি খাশি জবাই করা হয়েছে। ১৫০০  মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করব। আশা করছি যারা আসবেন, কেউ খালি হাতে ফিরবেন না।

পাথরঘাটা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাঁকন বলেন, পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সে জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। আমার ব্যক্তিগত তরফ থেকে ইতোমধ্যে যেসব জায়গায় গরু জবাই করা হয়েছে সেখানে ব্লিচিং পাউডার দেওয়া শুরু করেছি। এছাড়াও মানুষকে সচেতন করছি, যারা কোরবানি দিয়েছেন, নিজ উদ্যোগে গরু জবাইয়ের পর সেই স্থান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার জন্য।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন