ট্রেনে কাটা পড়ে বাংলাদেশী ছাত্রীর মৃত্যু তদন্তে অসন্তুষ্ট পরিবার


গত বুধবার দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের ব্রুকলীনের এক সাবওয়ে (পাতাল ট্রেন) ষ্টেশনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কলেজ ছাত্রী জিনাত হোসেন (২৪) নামের এক তরুণী ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, জিনাত হোসেন আত্মহত্যা করেছে। তবে পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট মানতে নারাজ তার পরিবার ও প্রবাসীরা।
শনিবার (১৪ মে) স্থানীয় সময় দুপুরে নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের বায়তুল জান্নাহ মসজিদে জিনাতের জানাজার আগে তার নানা মো. কবীর সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, ‘জিনাত আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে। কিন্তু এটা আমরা মনে করি না।’
পুলিশ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ওপর থেকে পড়ে মৃত্যু’। এটা আসলে ‘হেইট ক্রাইম’। এর প্রতিবাদে কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান মো. কবীর।
আমির হোসেন ও জেসমীন হোসেন দম্পতির একমাত্র মেয়ে জিনাত নিউইয়র্কের হান্টার কলেজের ছাত্রী ছিলেন, তাদের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার জগতপুর গ্রামে।
বুধবার রাতে ম্যানহটান থেকে ব্রুকলিনগামী ট্রেনের ৫৫ স্ট্রিট সাবওয়ে থেকে ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কলেজের ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে ওই জায়গায় তার মৃত্যু হয়।
জিনাত তার মা-বাবার সঙ্গে নিউইয়র্কের অস্টম অ্যাভিনিউ এবং ৪২ স্ট্রিটের এক বাসায় থাকতেন। ২০১৫ সালে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তিনি। তার একমাত্র বড় ভাই আবিদ হোসেন রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন।
১৪ মে (শনিবার) জানাজার সময় জিনাতের কফিনের পাশে তার বাবা আমির হোসেনকে দেখা যায় শোকে বাকরুদ্ধ অবস্থায়। তিনি বার বার কফিন ছুঁয়ে মেয়েকে অনুভব করতে চাইছিলেন।
জানাজা শেষে জিনাতের কফিন মসজিদের সামনে আনার পর হুইল চেয়ারে মা জেসমীন হোসেন কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। পরে নিউজার্সিতে দাফন করা হয় জিনাতকে।
তার খালু যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গমাতা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডা. এনামুল হক জানান, তারা জিনাতের মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য নিয়ে ‘পুলিশের লুকোচুরির প্রতিবাদে’ সমাবেশ ও প্রেস কনফারেন্স করবেন।
এমইউআর
