ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

Motobad news

সৈকতে অব্যবস্থাপনা, দ্বীপের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কা

সৈকতে অব্যবস্থাপনা, দ্বীপের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঈদের ছুটিতে পর্যটকে সরব ‘জাহাজমারা’ দ্বীপ। দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, বিস্তীর্ণ জলরাশি, আর সবুজ বনাঞ্চল। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ। প্রাকৃতিক এমন সৌন্দর্যের টানে সাগরকন্যাখ্যাত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার এ দ্বীপে ছুটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।


কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দ্বীপটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে; বলছেন সচেতন পর্যটকরা। তবে এসব দেখার যেন কেউই নেই। অনেকটাই অভিভাবকহীন পর্যটনের গুরুত্বপূর্ণ এই স্পট।

জানা গেছে, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাহাজমারায় এসেছেন হাজারও ভ্রমণপিপাসু পর্যটক। পর্যটকের উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠেছে দ্বীপটি। শনিবার পর্যন্ত ১০-১৫ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে জাহাজমারায়। তবে ঈদের আমেজ কমলে অথবা ঝড়-বৃষ্টি হলেই পর্যটকশূন্য হয়ে যাবে গোটা দ্বীপটি। এমনটাই ধারণা করছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা।

শুক্র ও শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, সৈকতে কেউ এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউ এসেছেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। তাদের হইহুল্লোড়ে মুখর হয়ে উঠেছে দ্বীপটি। ফিরে পেয়েছে করোনায় স্থবির হয়ে যাওয়া সৈকতের প্রাণ। তাই তো কেউ কেউ মুক্ত বাতাসে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউ ঢেউয়ের স্পর্শে সৈকতে দুপা ভিজিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চাইছেন। কেউবা সমুদ্র স্নানে মেতে উঠেছেন। গানবাজনার তালে তালে চলছে বনভোজনও।

তবে অব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন জাহাজমারা সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন পর্যটকরা। তাদের অভিযোগ, সি-বিচ ও সৈকতে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। শুক্র ও শনিবার জাহাজমারা সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, সৈকতের নিঃসর্গ পয়েন্টের বিচজুড়ে প্লাস্টিকের বোতল, চিপস-চানাচুরের প্যাকেট ও নারিকেলের ছোলা পড়ে আছে। পর্যটকরা যেখানে-সেখানে এগুলো ফেলছেন। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য, অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

জাহাজমারা সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা বলছেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জাহাজমারা সৈকতে এসে তারা মুগ্ধ। তারা বলছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে এটি অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পটে পরিণত হবে। এর সৌন্দর্যের টানে প্রকৃতিপ্রেমীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসবেন। সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটক রওশন আহম্মেদ মৃধা বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে পর্যটক আরও বাড়বে এখানে। বিশেষ করে চরগঙ্গা থেকে জাহাজমারা পর্যন্ত প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণ খুবই প্রয়োজন।’

মৌডুবি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান রাসেল বলেন, ‘আমাদের নিজ উদ্যোগে পর্যটকদের নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক আমরা সেখানকার খোঁজখবর রাখছি। নির্বিঘ্নে পর্যটকরা জাহাজমারা সৈকতে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। মাঝেমধ্যেই দুজন চৌকিদার পাঠিয়ে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করাই।’

বন বিভাগের মৌডুবি ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্র্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজমারা সৈকতের নিঃসর্গ পয়েন্ট বন বিভাগের সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। ওটা খাস সম্পত্তি। সুতরাং সেখানে আমাদের তদারকি নেই। আমাদের তদারকি ওটার পাশেই সংরক্ষিত বনে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘জাহাজমারা সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় কী করা যায়, তা আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন