কলাপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার জোটেনি গরীবের ভাগ্যে


কলাপাড়ায় চাকামইয়া ইউনিয়নের বেতমোড় গ্রামে বাড়ি প্রতিবন্ধী আব্দুল জলিলের। চার জনের সংসারে অভাবনীয় কষ্ট। নিজে কোন কাজও করতে পারেন না। এই পরিবারটি ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহার বিশেষ ভিজিএফএর ৪৫০ টাকা। মানুষটি এখন কী করবেন। অথচ ওই ইউনিয়নে ঈদ উপহার হিসেবে ৪৫০ টাকা করে ৪৬১৫ পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিতরণও শেষ হয়েছে।
পশ্চিম ধুলাসার গ্রামের তাসলিমা জানান, চারটি সন্তান রেখে স্বামী ১৪ বছর নিরুদ্দেশ। এরপরে সংসারের ঘানি টানছেন। যেন বইতে না পারার বোঝা। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এখন বিভিন্ন জনের বাড়িতে যখন যে কাজ জোটে তাই করে সংসারের যোগান দেন। তবে এবারে ভিজিডির চাল পেতে শুরু করেছেন। এই স্বামী পরিত্যক্ত মহিলার ভাগ্যেও জোটেনি ৪৫০ টাকার উপহার।
ক্ষোভে জানালেন এক ঘরের চার/পাঁচ জনকেও ৪৫০ করে টাকা দেয়ার অভিযোগ তার। একই গ্রামের জেলে কালাম সিকদার জানালেন তিনিও পাননি ৪৫০টাকার উপহার।
স্ত্রী বিউটি বেগম ও চার মেয়ে নিয়ে কালাম সিকদারের সংসার। এমন দৃশ্য অধিকাংশ ইউনিয়নের। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে কলাপাড়ার ১২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৬৬ হাজার ৯১৬ পরিবারকে ঈদ উপহার হিসেবে বিশেষ ভিজিএফএর ৪৫০ টাকা করে বিতরন করা হয়েছে। নগদ এই টাকা ইতোমধ্যে বিতরন সম্পন্ন হয়েছে।
তবে জনপ্রতিনিধিদের সরকারি নির্দেশনা দেয়া রয়েছে দুস্থ/ অন্যান্য দূর্যোগাক্রান্ত/ অতিদরিদ্র ব্যক্তি-পরিবারের সহায়তা প্রদানের জন্য ভিজিএফএর এই টাকা দেয়া বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিতরণে অন্তত ৪০ ভাগ টাকা বিত্তবানদের দেয়া হয়েছে। নিয়ম-কানুন মানা হয়নি অধিকাংশ ক্ষেত্রে।
ফলে সরকার প্রধান মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া দরিদ্র মানুষের জন্য ঈদের ৪৫০ টাকা শত শত দরিদ্র পরিবারের ভাগ্যে জোটেনি। বঞ্চিতদের অভিযোগ বিতরণ তালিকা টানিয়ে দেয়া হোক। তাইলেই বের হয়ে যাবে কাদেরকে এই টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
২০১১ সালের আদম শুমারি অনুসারে কলাপাড়ায় মোট পরিবার সংখ্যা ৫৭হাজার ৫২৫ টি। আর ২০১৯ সালের কৃষিশুমারির হিসেবে মোট পরিবার সংখ্যা ৬২ হাজার ২৮২ টি। তবে কৃষিশুমারির এই তথ্য সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত স্বীকৃত নয়। প্রকাশ হয়নি। এই হিসেবে অর্ধেক পরিবার দরিদ্র-হতদরিদ্র হলেও কেউ বাদ যাবার নয়।
কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের নিকটজন, সমর্থক। পছন্দের মানুষ, বিত্তজনদের মধ্যে এই টাকা নিজেদের মতো বিতরনের ফলে বঞ্চিত রয়েছে প্রকৃত পাওয়ার দাবিদার শত শত পরিবার।
কে.আর/এমএকে
