ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

Motobad news

মায়ের চোখের সামনেই ইটভাটার ট্রলি চাপায় নিহত হল শিশু মিম

মায়ের চোখের সামনেই ইটভাটার ট্রলি চাপায় নিহত হল শিশু মিম
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

মায়ের হাত ধরেই প্রতিদিন মাদ্রাসায় যায় শিশু তাসমিয়া আক্তার মিম (৫)। মঙ্গলবার সকালেও বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গেই মাদ্রাসায় যাচ্ছিল সে। সঙ্গে ছিল চাচাতো বোন সহপাঠী ঝুমা। মায়ের চোখের সামনেই ইটভাটার ট্রলির চাপায় মৃত্যু হয় মিমের। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের উত্তমপুর বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তাসমিয়া দক্ষিণ আদাখোলা গ্রামের মালদ্বিপ প্রবাসী এনামুল হকের মেয়ে। সে উত্তমপুর নূরাণী মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্রী।  প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকালে বাড়ি থেকে মেয়ে মিম ও দেবরের মেয়ে ঝুমাকে নিয়ে উত্তরপুর মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন মা জাহানারা বেগম। পথে উত্তমপুর বাজার এলাকায় স্থানীয় উত্তরমুপর ব্রিকস নামের ইটভাটার একটি ট্রলি দেখে মা মেয়েদের হাতে ধরে পাশে যান।

কিন্তু দ্রুত গতিতে আসা ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাসমিয়াকে চাপা দেয়। মায়ের হাতে থেকেও রক্ষা পায়নি শিশুটি। চোখের সামনেই মা ছটফট করতে দেখেন শিশু সন্তানকে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা অবস্থার অবনতি দেখে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পথেই মারা যায় শিশু তাসমিয়া। অভিযোগ রয়েছে ইটভাটার ট্রলি বেপরোয়াভাবে চালানোর কারনে প্রায়ই ওই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে।  শিশুটির মা জাহানারা বেগম বলেন, প্রতিদিনই আমার মেয়ে ও দেবরের মেয়েকে নিয়ে মাদ্রাসায় যাই। ওদের ক্লাস শেষ হলে আবার বাড়িতে নিয়ে আসি। আজকে (মঙ্গলবার) সকালে রাস্তা দিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় দ্রুত গতিতে আসা একটি ট্রলি আমার মেয়েকে চাপা দেয়। এ সময় মেয়ে আমার হাত ধরা ছিল। চোখের সামনেই আমার হাত থেকে ছিটকে ট্রলির চাকার নিচে পড়ে যায় সে।

স্থানীয় লোকজন এসে তাকে হজাসপাতালে নিয়েও বাঁচাতে পারেনি। আমার দুই মেয়ে ছোট মেয়ে মারা গেল। ওর বয়স যখন আড়াই বছর, তখন ওর বাবা চাকরিতে মালদ্বিপ চলে যায়। মেয়েকে মাদ্রাসায় দিয়েছি বাবার ইচ্ছাতেই। বাবার সঙ্গে আর মিমের দেখা হলো না।   ইটভাটার ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, ট্রলিটি স্থানীয় ইব্রাহিম ও তাঁর ভাই ইমরান চালায়। তাঁরা খালি ট্রলি নিয়ে ভাটায় আসছিল। বাজারের পূর্ব পাশে আসলে দুর্ঘটনা ঘটে।  রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলক চন্দ্র রায় বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ উত্তমপুর বাজার এলাকায় যায়। কিন্তু ট্রলি নিয়ে চালক দ্রুত চলে যাওয়ায় তাকে পাওয়া যায়নি। শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মেয়েটির বাবা একজন প্রবাসী।  

 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন