কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির মুখে কুয়াকাটা পর্যটন শিল্প


করোনার ২য় ঢেউ’র প্রায় ১ মাসে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন নগরী কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা। একদিকে রমজান মাস অন্যদিকে করোনার আঘাতে কর্মহীন হচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। সরকারি কোনো প্রণোদনা না পেয়ে পথে বসার উপক্রম এইসব পর্যটক শিল্পের সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, সারা দেশের ন্যায় কুয়াকাটার ১৩টি ট্যুরিস্ট স্পট এখন খাঁ খাঁ করছে। লকডাউনের দুই সপ্তাহে পুরো কুয়াকাটা স্থবির। লকডাউনের শুরুতেই হোটেল-মোটেল এবং ওয়াটার বাসসহ ট্যুরিস্ট বোটগুলো বন্ধ করে দেয় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক। এর পড়ে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় বার্মিজ মার্কেট, সী’বিচের ঝিনুক মার্কেট, রাখাইন মহিলা মার্কেট, শুটকির দোকান, খাবার রেস্তরাঁ, মিউজিয়াম, ইলিশপার্কসহ ছোটবড় মাঝারি সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ট্যুরিজম নেতাদের পরিসংখ্যানে বলছে করোনার প্রভাবে আমাদের কুয়াকাটায় প্রায় ১ মাসে কয়েক কোটি টাকা লোকসানের মুখে।
সৈকতে বার্মিজ আচারের দোকানদার জাকারিয়া জাহিদ বলেন, আমার দোকানে কর্মচারীদের বেতন দিতে পারি নাই। ভরা মৌসুমেও দোকান বন্ধ। কুয়াকাটা সী ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস পরিচালক জনি আলমগীর বলেন, এক মাসে আমাদের প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভাসমান কাঁকড়া ফ্রাই দোকানদার, জামাল কান্নার চোখে জানান, এমনিতেই ৬ মাস ব্যবসা করি সাগরপারে তাও এখন এই অবস্থায় বন্ধ দোকানপাট কি করবো লোন নেয়া আছে খাইবো না দেনা দেবো পারি না মানুষের কাছে হাত পাত্তে।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোশিয়েশন (কুটুম)‘র সিনিয়র সহ-সভাপতি হোসাইন আমির বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী আঘাতের ছোবল পর্যটন শিল্পে বেশি প্রভাব পড়েছে। কুয়াকাটা মাঝারি ধরনের ব্যবসায়ীদের ক্ষতির আশঙ্কা আমি বেশি মনে করছি। কারণ যত অভাব থাকুক লজ্জার কারণে এরা বাহিরে কারো কাছে হাত পাত্তে পারবে না। তাদের পাশে সরকারের আলাদাভাবে বিশেষ নজর দেয়া উচিৎ।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম মোতালেব শরিফ জানান, করোনায় সবচেয়ে ক্ষতি হতে যাচ্ছে পর্যটন খ্যাত। সে অনুযায়ী আমাদের কুয়াকাটায় মার্চের ২২ থেকে পর্যটক হোটেল বন্ধ রাখায় পর্যটন শিল্পে এ সিজন পুরোটাই শেষ। সরকার ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় থাকা কুয়াকাটার ব্যাংকগুলো খুলে দিয়ে ব্যবসায়ীদের দ্রুত স্বল্পঋণের ব্যবস্থা করলে কিছুটা হলেও সামাল দেয়া যাবে।
টিএইচএ/
