বৃদ্ধ বাবাকে লাথি মারা শিক্ষক ছেলে বরখাস্ত

পাবনার চাটমোহরে বৃদ্ধ বাবাকে লাথি ও মারপিট করার অভিযোগে স্কুলশিক্ষক মো. মজনুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (০৩ নভেম্বর) স্কুলের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সৈকত ইসলাম এক আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আ. ছালাম। মজনুর রহমান চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন মডেল হাইস্কুলের ভোকেশনাল শাখার ট্রেড ইন্সট্রাক্টর। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মহেলা পোস্ট অফিসের সাব পোস্ট মাস্টার আতাউর রহমানের ছেলে মজনুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরে অন্য ভাই-বোনদের ফাঁকি দিয়ে বাবার সমস্ত সম্পত্তি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে চাপ দিয়ে আসছিলেন। বাবা আতাউর রহমান কোনোভাবেই এতে রাজি না হওয়ায় ছেলের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। ফলে ছেলে মজনুর রহমান তাকে নানা হুমকি দিতে থাকে। 

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে মহেলা পোস্ট অফিসে যান মজনুর। সেখানে বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ তার নামের সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। বাবা তাতে রাজি না হওয়ায় পথরোধ করে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।

পরে মোবাইল ফোন নিয়ে মজনুর মোটরসাইকেলে উঠতে চাইলে বাবা বাধা দেন। তখন তিনি বাবাকে লাথি মারেন। এ সময় বাবার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয় তার। পরে আশপাশের লোকজন এসে মজনুরকে পিটুনি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন।

ঘটনার পর বাবা আতাউর রহমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তিনি এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ মজনুরকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উভয়ই থানায় অবস্থান করেন। পরে ছেলের নামে মামলা করেন বাবা।

ভুক্তভোগী বাবা আতাউর রহমান জানান, ছেলের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করিনি। বুকের ব্যথায় এখনও কষ্ট পাচ্ছি। ওর মাকে মারার জন্য গলায় ছুরি পর্যন্ত ধরেছিল। বাড়িতে এসে আমাকে বার বার মারে। এমন সন্তান আল্লাহ যেন কারও ঘরে না দেন। ছেলে জেলহাজতে আছে। এতে আমার বিন্দুমাত্র আফসোস নেই। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। অনেকেই বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলতে বলছেন। কিন্তু আমি চাই এ ঘটনার সঠিক বিচার হোক।

চাটমোহর সরকারি আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালাম বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাকর ও দুঃখজনক। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়। তাকে নিয়ম মেনে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈকত ইসলাম বলেন, তার বাবার দেওয়া অভিযোগের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।