ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

কিয়ামতের দিন যারা অন্ধ হয়ে উঠবে

কিয়ামতের দিন যারা অন্ধ হয়ে উঠবে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

দৃষ্টিশক্তি মহান আল্লাহর অমূল্য নিয়ামত। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে এটাকে হিদায়াত, ঈমান গ্রহণ, উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন—সুরা বালাদে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি কি তোমাদের চক্ষু দিইনি?’ (সুরা বালাদ, আয়াত : ৮)

পবিত্র কোরআনের এই সুরায় মহান আল্লাহ মানুষকে হিদায়াত গ্রহণের জন্য সহায়ক যেসব নিয়ামত দিয়েছেন, তাতে চোখের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। যারা এই নিয়ামতের শুকরিয়া করবে না, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাদের অন্ধ অবস্থায় উঠাবেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয়ই তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন জমায়েত করব অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, হে আমার রব, কেন আপনি আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন? অথচ আমি তো ছিলাম দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন! তিনি বলবেন, এভাবেই আমার নিদর্শনাবলি তোমার কাছে এসেছিল; কিন্তু তুমি তা ছেড়ে দিয়েছিলে এবং সেভাবে আজ তোমাকেও (জাহান্নামে) ছেড়ে দেওয়া হবে।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪-১২৬)

অন্য আয়াতে এসেছে, ‘আর আল্লাহ যাকে হিদায়াত দান করেন সে-ই হিদায়াতপ্রাপ্ত এবং যাকে তিনি পথহারা করেন তুমি কখনো তার জন্য তাঁকে ছাড়া অভিভাবক পাবে না। আর আমি (আল্লাহ) কিয়ামতের দিন তাদের একত্র করব উপুড় করে, অন্ধ, মূক ও বধির অবস্থায়। তাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম। যখনই তা নিস্তেজ হবে তখনই আমি তাদের জন্য আগুন বাড়িয়ে দেব।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৯৭)
অর্থাৎ দুনিয়ায় তারা যে অবস্থায় ছিল—সত্যকে দেখতে পেত না, সত্য কথা শুনতে পেত না এবং সত্য কথা বলত না; ঠিক তেমনি কিয়ামতের দিন তাদের উঠানো হবে। অনেক তাফসিরবিদের মতে, এখানে বাহ্যিক দৃষ্টিহীনতার কথা বলা হয়নি; বরং অন্ধ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, অন্তরের দৃষ্টিশক্তিহীনতা। কারণ পবিত্র কোরআনের এক আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে, ‘তারা কি দেশ ভ্রমণ করেনি? তাহলে তারা জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তিসম্পন্ন শ্রবণের অধিকারী হতে পারত। বস্তুত চোখ তো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হচ্ছে বুকের মধ্যে অবস্থিত হৃদয়।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৪৬)

তাদের অন্ধত্ব হৃদয়ের চোখের হোক আর চর্মচোখের, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি যে ভয়াবহ হবে, এ কথা নিশ্চিত। পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে বলা হয়েছে যে সেদিন তাদের চেহারার ওপর ভর করে আল্লাহর সামনে হাজির করা হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যাদের মুখের ওপর ভর দিয়ে চলা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, তারা স্থানের দিক থেকে অতি নিকৃষ্ট এবং বেশি পথভ্রষ্ট।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৩৪)

পবিত্র কোরআনের এই আয়াত দেখে সবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে চেহারার ওপর ভর করে চলাচল কি সম্ভব? এমন প্রশ্ন সাহাবায়ে কেরামের মনেও এসেছিল। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর নবী, কিয়ামতের দিন কাফিরদের মুখে ভর করে চলা অবস্থায় একত্র করা হবে? তিনি বলেন, যিনি এ দুনিয়ায় তাকে দুই পায়ের ওপর চালাতে পারছেন, তিনি কি কিয়ামতের দিন মুখে ভর করে তাকে চালাতে পারবেন না? কাতাদা (রহ.) বলেন, নিশ্চয়ই, আমার রবের ইজ্জতের কসম!’ (বুখারি, হাদিস : ৪৭৬০) 


এসএম
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন