‘কম দামে চাল চাইলে ধানের দাম নেমে যাবে, কৃষক মরবে’


২০১৮ সালের মতো আমাদের চাল খেতে হলে আবারও জিরো ট্যাক্সে (শুল্কমুক্ত) চাল আমদানি করতে হবে। তখন বাজারে ধানের দাম ৫০০-৭০০ টাকায় নেমে যাবে। ফলে কৃষক মরে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার সান্তাহার সিএসডি (সেন্ট্রাল সাপ্লাই ডিপো) খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষক ও নিম্ন আয়ের ভোক্তা উভয়কেই বাঁচানোর চেষ্টা করছে, তাই ২০১৮ সালের হিসাবে চাল খেতে চাইলে শুল্কমুক্ত হারে চাল আমদানির সুযোগ করে দিতে হবে। আর তখনই অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে নেমে আসবে, আর ধানের দাম ৫০০-৭০০ টাকা মণে নেমে আসবে। আজ চালের দাম বেড়ে গেছে বলে যারা সমালোচনা করছেন, তখন তারাই আবার বলবেন কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়ার কথা জানিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ভোক্তারা যাতে গ্রহণযোগ্য দরে চাল কিনতে পারেন সেই লক্ষ্যে বেসরকারি পর্যায়ে ২৫ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫-১৭ আগস্টের পরই বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি শুরু হবে। আমন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত এই আমদানি চলবে। আমন ধান বাজারে এলে কৃষকদের স্বার্থে আমদানি বন্ধ করে দেয়া হবে।
চলমান বোরো সংগ্রহ আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অভিযানে ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ লাখ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে, আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শতভাগ চাল সংগ্রহ হয়ে যাবে। ৩১ আগস্টের মধ্যে যারা চাল দিতে ব্যর্থ হবে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।
অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা শুরুর কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যেসব মিল মালিক পাক্ষিক ছাঁটাই–ক্ষমতার বাইরে গুদামে চাল মজুত করেছেন এবং যেসব নব্য মজুতদার অবৈধভাবে চাল মজুত করে রাখছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ছাড়াও প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সান্তাহার সিএসডি খাদ্যগুদাম পরিদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটওয়ারী, নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবীর, বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান, আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায়, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোতাহার আলী, সান্তাহার সিএসডির ব্যবস্থাপক দুলাল উদ্দিন খান প্রমুখ।
এমবি
