সুরক্ষা অ্যাপে এক এনআইডিতে দুইবার রেজিস্ট্রেশন!


মহামারি করোনার ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে বিশ্বব্যাপী প্রতিক্ষার অবসান হতে চলেছে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে। এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশেও দেওয়া শুরু হয়েছে গণহারে। এজন্য স্বাস্থ অধিদপ্তর নির্ধারিত সুরক্ষা অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করতে হবে রেজিস্ট্রেশন। ন্যাশনাল আইডি নম্বরের মাধ্যমে এক ব্যক্তি একবারই রেজিস্ট্রেশন হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় বারের মতো করা যাচ্ছে এই রেজিস্ট্রেশন। এতে করে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
মহামারি করোনায় স্থবির যখন গোটা বিশ্ব, তখন স্বপ্ন দেখাচ্ছে আবিষ্কার হওয়া বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন। বাংলাদেশে দফায় দফায় বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন ভ্যাকসিন প্রয়োগ। যার পুরোটাই সম্পন্ন করা হচ্ছে সুরক্ষা অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এ ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপে শুধুমাত্র এনআইডি (ন্যাশনাল আইডি) নম্বর ও জন্ম তারিখ ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা যাচ্ছে। কিন্তু এতে দেখা দিয়েছে বিপত্তি।
একই এনআইডি নম্বর দিয়ে একাধিকবার রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে। তেমনি রেজিস্ট্রেশন করেছেন মাসুদুর রহমান। তিনি গত ২২ জুলাই সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। যেখানে টিকাকেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তিনি আবার একই এনআইডি নম্বর দিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। শুনতে অবাক লাগলেও দ্বিতীয়বারের মতো রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হচ্ছে অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে।
মাসুদুর রহমান বলেন, আমি তেমন কিছু বুঝি না। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আমার ছোট ভাইকে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বলেছিলাম। সে এনআইডি নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড করে দিয়েছে। কিন্তু ১ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও কোনো মেসেজ আসছে না। আবার চলে গেলাম গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায়। ভ্যাকসিন নিতে না পেরে মানসিক চাপে ভুগছিলাম। পরে টঙ্গীতে আবার রেজিস্ট্রেশনের চেষ্টা করি। এখানে এনআইডি নম্বরের শুরুতেই জন্ম সালটা বসিয়ে গত ৪ জুলাই আবার চেষ্টা করলে দ্বিতীয়বারের মতো রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়।
বিষয়টি ঢাকা পোস্টের এ প্রতিবেদকের কাছে জানায় মাসুদুর রহমান। যাচাই করার জন্য ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদকের এনআইডি নম্বর দিয়ে দুই জায়গা থেকে চেষ্টা করা হলে দুটোতেই নিবন্ধন সম্পন্ন হয়। এ প্রতিবেদক একবার ধামরাই টিকা কেন্দ্র দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। দ্বিতীয়বার সাভার টিকা কেন্দ্র দেখিয়ে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করেন।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, এমনটা হলে অবশ্যই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। একটা সময় নকল সনদ দিয়ে সয়লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বিষয়টি আজই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবেন বলে জানিয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মতো রেজিস্ট্রেশন দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো রেজিস্ট্রেশন হলেও ব্যক্তির সকল তথ্য একই থাকে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে একই ব্যক্তি দুইবার ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কেউ যদি জেনে বুঝে দুইবার নেয় তাহলে তো আমাদের করার কিছু নেই।
এমবি
