পরীমণির: তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে


আশুলিয়ার বোট ক্লাবে ‘ধর্ষণচেষ্টা’র অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমণির দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে অনির্ধারিত ব্রিফিংয়ে সিআইডির ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
গত বুধবার র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমণিকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিআইডিতে হস্তান্তর করেছে বনানী থানা পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছে র্যাব।
পরীমণির নানা অপরাধের সূত্র অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়েই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হল, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম সাকলায়েন শিথিলের সঙ্গে পরীমণির ‘অন্তরঙ্গতা’র কথা। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম খবরও প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন,‘ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হলেও আমরা অবশ্যই তার বিষয়েও তদন্ত করব। কেউ তো আইনের ঊর্ধ্বে না। সে যেই হোক না কেন, আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত করে সত্যি ঘটনা উদঘাটন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা থরোলি তদন্ত করব। যেকোনো বিষয় আমাদের নজরে আসবে। যে বিষয়গুলো মিডিয়াতে আসবে সেগুলো আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসা করে সত্যিকারের ঘটনাটি খুঁজে বের করব।’
পরীমণিকে জিজ্ঞাসাবাদে ইতোমধ্যে মাদক চক্রের নানা হোতাদের নাম জানতে পেরেছে র্যাব ও পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, রাজধানীর অভিজাত এলাকায় মাদকের আসর বসিয়ে ধনাঢ্যদের টার্গেট করতেন সেই হোতারা। তাদের মধ্যে একজন নজরুল ইসলাম রাজের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে পর্ণোগ্রাফির মামলাও।
মাদক মামলায় আরও গ্রেপ্তার হওয়া মডেল পিয়াসা ও মৌয়ের কাছ থেকে মাদকের হোতাদের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনী । সেই হোতাদের নজরদারিতে রেখেছে তারা।
ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, ‘আরও যদি কোনো প্রভাবশালী জড়িত জড়িত থাকে,তিনি যত বড় শক্তিশালী হোন না কেন, আমরা তাদের আইনের আওতায় আনব। অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে তা তদন্ত করে খুঁজে আনব।’
পরীমণিকে কোটি টাকার দামে গাড়ি কিনে দেওয়া এক ব্যাংক এমডির বিষয়েও তদন্ত করা হবেও বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা। ‘প্রয়োজনে’ তাকে ডাকা হবে বলে জানান তিনি।
চলতি বছর জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পরীমণি ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিযোগ আনেন, ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ তাকে ‘ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন’। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করেন। পরে রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে পরীমণি তার উপর ‘নির্যাতনের’ ঘটনা দেশবাসীকে জানান।
পরে সাভার মডেল থানায় নাসির উদ্দিনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে তিনি ‘ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয় নাসির উদ্দিনসহ বাকি আসামিদের। পরে নাসির উদ্দিনরা জামিনে বের হয়ে আসেন। গত বুধবার পরীমণি গ্রেপ্তার হওয়ার পর নাসির উদ্দিন জানান, তিনি বিমানবন্দর থানায় পরীমণির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করবেন।
পরীর দায়ের করা সেই মামলার তদন্ত করছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম সাকলায়েন শিথিল।
এমইউআর
