করোনার নয়া ‘হটস্পট’ বরিশালের ৩ জেলা


দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের ১৬ মাস পর আবারও সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে শুরু করেছে বরিশালের কয়েকটি জেলায়। গত বছর এসব জেলায় সংক্রমণের হার নিম্মমুখী থাকলেও চলতি জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারে পিছনে ফেলেছে বিগত ১৬ মাসের রেকর্ড।
নতুন করে ‘হটস্পট’ হয়ে উঠছে এসব জেলা। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। গত চার সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখা দিয়েছে বরিশালের ৩ জেলায়। এর মধ্যে রয়েছে বরিশাল সদর, বরগুনা জেলা ও ভোলা জেলা। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
গত ৫ জুলাই এখানে শনাক্তের হার ছিল ২৭, তা বেড়ে হয়েছে ৫৩ শতাংশ। ভোলায় বেড়েছে ২৬ শতাংশ। তিন সপ্তাহ আগে ছিল ২১, এখন ৪৭ শতাংশ। বরগুনায় ৬ শতাংশ বেড়েছে, বরিশালে ৩ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে । এসব জেলায় এ মাসের প্রথম থেকেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও গত চার সপ্তাহে তা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
গত বছরের ১১ মার্চ থেকে চলতি জুলাই মাসে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১৬ মাসে বরিশাল জেলায় মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ২৬৫ জন তার মধ্যে শুধু ৫ হাজার ৩৮৭ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে জুলাই মাসের ৪ সপ্তাহে। এ পর্যন্ত মোট ১৫২ জনের মৃত্যু হলেও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে চলতি মাসে।
ভোলা জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪০২ জন তার মধ্যে এ মাসেই আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৪২ জন, মারা গেছে ৪ জন এবং বরগুনায় বিগত ১৬ মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৪৬ জন তার মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩০৪ জন।
বরগুনা জেলায় আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছেন ৬৩ জন তার মধ্যে চলতি মাসেই মারা গেছে ৩৩ জন। অর্থাৎ বিগত ১৫ মাসে যতজন আক্রা›ত হয়েছে ও মারা গেছে তার অর্ধেকই আক্রা›ত ও মৃত্যু হয়েছে ১ মাসে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, হঠাৎ করেই চলতি মাসে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কয়েকটি জেলায় উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা আমাদে জন্যও এলার্মিং। গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চায় না তাই এখন গ্রামে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি আবার খুব সংকটজনক অবস্থা হলে একেবাওে শেষ সময়ে গ্রাম থেকে রোগী বিভাগীয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রোগী ও স্বজনদেও অসচেতনতার জন্য আক্রন্ত ও মৃত্যুর হার দুটোই বাড়ছে।
উল্লেখ্য, বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায় ২০২০ সালের ৯ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সেই থেকে বুধবার (২৮ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত বিভাগের ছয় জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৩১ হাজার ৪২৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৪২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৬৫ জন।
কেআর
