ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

নেছারাবাদে ঘর পেয়ে খুশি তারা 

নেছারাবাদে ঘর পেয়ে খুশি তারা 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীনদের জন্য ২০৪টি টিনশেড দালান ঘর করে দেওয়া হয়েছে। যাদের ‘জমি নেই, ঘর নেই’ এমন ২০৪ জন অসহায় দুস্থ পরিবারের মধ্যে ঘরগুলো প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বর, ইউপি সচিব এবং ইউনিয়ন তহসিলদার মোট চারজনের করা তালিকা উপজেলা কমিটি যাচাই বাছাই করে প্রকৃত লোকদের হাতে এসব ঘর তুলে দেয়া হয়েছে। ঘর পেয়ে খুশিতে এখন আত্মহারা ওইসব অভাবী পরিবারগুলো। এখন তারা উপরওলার কাছে দু’হাত তুলে দোয়া করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।

রফিক হাওলাদার (৪২) ভিক্ষা করে জীবন যাপন করেন। সংসারে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে। থাকতেন অন্যের দয়ায় পরের জায়গায় ঝুপড়ি ঘর তুলে। ঝড় বন্যা আসলেই তাকে পরিবার নিয়ে ছুটতে হতো নিকটস্থ কোন আশ্রয় কেন্দ্রে বা কারো শক্ত পোক্ত দালান ঘরে। এ নিয়ে ভিক্ষুক রফিক চিন্তিত থাকত। তাই সে সবসময় মনে মনে স্বপ্ন দেখত একটি টিনের চালার ঘর তোলার। কিন্তু কে জানত একসময় রফিকের স্বপ্ন আলাদিনের চেরাগের মত সত্যি হবে। ভিক্ষুক রফিক হাওলাদার এখন থাকেন উপজেলার সমুদয়কাঠি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার জমিসহ টিনশেড দালান ঘরে। রফিক এখন জমি ও ঘরের মালিক। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি রফিকের এখন এমনই মনে হচ্ছে। মুজিবর্ষের উপহার আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর দ্বিতীয় পর্যায়ের ঘর পেয়ে রফিক হাওলাদার খুশিতে আত্মহারা। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক হায়াত দারাস করেন। এভাবে যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ সেবায় নিয়োজিত থাকেন।’

গীতা রানি (৩৮) স্বামী নেই। তার স্বামী মারা গেছে অনেক বছর হয়েছে। তাদের বসবাস উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানাতে। ছেলে অমলকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে কৃষানীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ৮ বছর ধরে মানুষের বাড়ীতে ভাড়া থাকেন। গীতা স্বপ্ন দেখতো যদি নিজের জমিসহ একটি ঘর থাকতো। গীতা এখন নানান রোগ শোকে আর মানুষের বাড়ীতে কাজ করতে পারেন না। তাই ছেলে অমলের উপার্জনের টাকায় চলে তাদের সংসার। ঘর তুলবেন কিভাবে। তারপরও গীতা রানি উপরওয়ালার কাছে একটি ঘরের জন্য মনে মনে প্রার্থনা করতেন সবসময়। 

হঠাৎ একদিন তারা জানতে পারেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিনামূল্যে ঘর দেয়া হচ্ছে। পরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে বলে তারা ঘরের জন্য আবেদন জমা দেন। আবেদন দিয়েই তাদের কোন বেগ পেতে হয়নি। তারা একদিন জানতে পারেন কেবল ঘরই নয় জমিসহ তারা একটি টিনশেড দালান ঘর পেয়েছেন। 

কে জানত উপরওয়ালা গীতার প্রার্থনার কথা শুনবেন। গীতা ও তার ছেলে অমল ঘর পেয়ে মহা খুশি। তারা মা ছেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এভাবে কেবল রফিক হাওলাদার, গীতা রানিই নয়, সমদেকাঠির হাসেন আলী হাওলাদারের ছেলে আলী হোসেন (৬০), তাসেন উদ্দীনের ছেলে আলী আকবর (৭৪), কুড়িয়ানার রাধা চন্দন বেপারির ছেলে সতীষ বেপারি (৮০) মত উপজেলার ২০৪ জন হতদরিদ্র, দুস্থ, ছিন্নমুল লোকেরা এখন মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে খুজে পেয়েছেন উপযুক্ত মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাদের পরিবারে এখন খুশির বন্যা। তারা সকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞা জানিয়েছেন। একইসাথে ঘরগুলো সঠিক মানুষদের মাঝে বন্টন করার জন্য তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসেন এর প্রতি।

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারফ হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের দিন আমরা ১৬৫ খানা ঘর হস্তান্তর করেছি। বাকি ঘরগুলো নির্মানাধীন। সেগুলোর নির্মান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। উপজেলার টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের আবেদন হাতে পেয়ে যাচাই বাছাই করে প্রকৃত লোকদের মাঝে ঘরগুলো দেয়া হচ্ছে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন