ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

Motobad news

ভারতের প্রেসিডেন্টের বেতন শিক্ষকদের চেয়েও কম!

ভারতের প্রেসিডেন্টের বেতন শিক্ষকদের চেয়েও কম!
ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। ফাইল ছবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

এশিয়ার প্রভাবশালী দেশ ভারতের প্রেসিডেন্টের বেতন ও সুযোগ সুবিধার বিষয়াদি জানার কৌতুহল রয়েছে অনেকে মনে। উত্তরপ্রদেশ সফরে গিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ নিজেই জানালেন তার বেতনের কথা।

তিনি জানিয়েছেন, মাসে ৫ লাখ টাকা বেতন পান তিনি। এর মধ্যে করই দিতে হয় পৌনে ৩ লক্ষ টাকার। তাতে যা বাঁচে, অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা তো বটেই, শিক্ষকদের রোজগারও তার চেয়ে বেশি। এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকার। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতের প্রেসিডেন্ট আজীবন বিনামূল্যে স্বাস্থ্য এবং আবাসন পরিষেবা সুবিধা পান। পদে আসীন থাকাকালীনও রাইসিনা হিলের কোনও খরচই প্রেসিডেন্টকে বহন করতে হয় না। কারণ কেন্দ্রীয় বাজেটেই প্রেসিডেন্ট ভবনের জন্য আলাদা করে ২০০ কোটির বেশি বরাদ্দ করা হয়, যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট, তার কর্মী এবং প্রেসিডেন্ট ভবনে কর্মরত সকলের ভাতা বাবদ ৮০ কোটিও রাখা হয়। 

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন কোবিন্দ। সেই সময় প্রেসিডেন্টর বেতন মাসিক দেড় লাখ টাকা ছিল, যা তৎকালীন মন্ত্রিসভার কোনও সচিবের বেতনের চেয়ে ১ লক্ষ টাকা কম ছিল। সপ্তম বেতন কমিশন চালু হওয়ার পর সে বছর অক্টোবরে প্রেসিডেন্টর বেতন বাড়িয়ে মাসিক ৫ লক্ষ টাকা করা হয়। শুধু তাই নয়, অবসর নেওয়ার পর মাসে দেড় লক্ষ টাকা করে পেনশন বরাদ্দ হয়েছে প্রেসিডেন্ট জন্য।

এমনকি আইনত যিনি প্রেসিডেন্টর জীবনসঙ্গী, তার জন্যও প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়াও, সাজানো বাংলো, বিমানূল্যে দু’টি ল্যান্ডলাইন এবং একটি মোবাইল, এক জন সচিব-সহ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ৫ কর্মী, কর্মীদের উপর খরচের জন্য বার্ষিক ৬০ হাজার টাকা, একজন সঙ্গীকে নিয়ে বিনামূল্যে বিমান ও ট্রেনে যাত্রার পরিষেবা পাবেন প্রেসিডেন্ট।

তবে ভারতের প্রেসিডেন্টের সেই বক্তব্য ঘিরে ভার্চুয়াল জগতে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। সরকারি কর্মকর্তা বিশেষ করে শিক্ষকদের রোজগার তার চেয়ে বেশি বলে দাবি করার বক্তব্যটি ঘিরে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

রাকেশ গুপ্ত নামের একজন লেখেন, ‘১৯৫১ সালের প্রেসিডেন্টর বেতন এবং পেনশন আইন অনুযায়ী, ভারতের প্রেসিডেন্টর বেতন করের আওতায় পড়ে না। তাহলে কি প্রেসিডেন্ট ঘুরিয়ে বেতন বাড়ানোর আর্জি জানাচ্ছেন? হচ্ছে টা কী?’

দুশ্যন্ত মহন্ত নামের এক নেটারিক লেখেন, ‘নির্মলা সীতারামনের কাছে যদি জানতে চাই যে প্রেসিডেন্ট কোন করের আওতায় পড়েন, তার জন্য কি আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে রাখতে হবে?’

অজয়কুমার মৌর্য নামের এক ব্যক্তি আবার কেন্দ্রীয় সরকারকেই কাঠগড়া তুলেছেন। তিনি লেখেন, ‘এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রেসিডেন্টর বেতন নিয়ে সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অবশেষে সত্যটা বললেন উনি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য যা যথেষ্ট। প্রেসিডেন্টকে সুবিচার দিতে হবে।’ 

দেবেন্দ্র যাদব লেখেন, ‘বুঝলাম না। 
১) বেতন করমুক্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট কেন ৫৫ শতাংশ কর দিচ্ছেন। 
২) কোন শিক্ষক ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন, আর প্রেসিডেন্টকে কর দিতে হচ্ছে।’ 

বেতন করমুক্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্টকে কর দিয়ে গেলে, এ নিয়ে কেন্দ্রকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও দাবি তোলেন অনেকে। তার জেরে শনিবার বিকেল থেকে টুইটারে #প্রেসিডেন্টঅবইন্ডিয়া জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এ নিয়ে কংগ্রেসের জাতীয় কার্যনির্বাহক নীরজ ভাটিয়া প্রশ্ন তোলে লেখেন, ‘১৯৫১ সালের প্রেসিডেন্টর বেতন এবং পেনশন ধারায় যে তার বেতন করমুক্ত, তা দেশের প্রথম নাগরিক জানেনই না?’


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন