ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

ঝিমিয়ে পড়েছে বরিশাল সিটিসহ পৌরসভার নাগরিক সেবা

ঝিমিয়ে পড়েছে বরিশাল সিটিসহ পৌরসভার নাগরিক সেবা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝিমিয়ে পড়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ বিভাগের বেশিরভাগ পৌরসভার নাগরিক সেবা। এতে ভোগান্তিতে সেবা প্রত্যাশীরা। প্রশাসক নিয়োগ হলেও জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদপত্র পেতে বেগ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে। এমনকি নিয়মিত শহরের বর্জ্য অপসারণ হয় না বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর স্থানীয় সরকারের বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি গা ঢাকা দেন। এতে স্থবির হয়ে পড়ে নাগরিক সেবা। সমস্যা সমাধানে দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

 
তবে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টনের দুই মাস পার হলেও স্থবিরতা কাটেনি পটুয়াখালী পৌরসভায়। সঠিকভাবে মশক নিধন না হওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপে নাজেহাল পৌরবাসী। এছাড়া, জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদপত্র পেতেও ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন। জনপ্রতিনিধি না থাকায় ওয়ারিশ শনাক্ত করতে বিভ্রান্তিতে পৌর কর্তৃপক্ষ।
 
নজরুল নামের এক বাসিন্দা জানান, গত ৫ দিন ধরে ভাইয়ের ছেলের জন্মনিবন্ধন করতে পৌরসভায় ঘুরছেন তিনি। তবে কোথাও কোনো সহায়তা পাননি। এমনকি নাগরিক সনদ পেতেও নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে।
 
 
আরিফ নামে আরেক বাসিন্দা জানান, পৌরসভা এলাকায় নেই কোনো মশক নিধন কার্যক্রম। ফলে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।
 
ভোগান্তির একই চিত্র প্রথম শ্রেণির পৌরসভা ঝালকাঠিতেও।  ময়লা-আবর্জনা পরিচ্ছন্নতা নিয়েও গাফিলতির অভিযোগ পৌরবাসীর।
 
সজিব নামে একজন জানান, যে কোনো প্রয়োজনীয় কাগজ পেতে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে। এছাড়া এলাকাগুলো ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত দায়সারা ভাবে সব কাজ চলছে বলেও অভিযোগ করেন এই যুবক।
 
খোদ বিভাগীয় সদর দফতর বরিশাল সিটি করপোরেশনের নাগরিক সেবা নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই নগরবাসীর। মশক নিধন কর্মসূচি চলে ঢিলেঢালা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমেও এসেছে ধীরগতি। জন্ম ও মৃত্যু সনদের পাশাপাশি কাগজপত্র সংক্রান্ত সব সেবা পেতে ভোগান্তির শেষ নেই।  
 
আরিফুল হক নামে এক বাসিন্দা জানান, সব ধরনের কার্যক্রমে ধীরগতি এসেছে। আগে কাউন্সিলরদের কাছে গেলে সব সমাধান হয়ে যেতো। এখন টেবিলে টেবিলে ঘুরেও কোনো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না।
 
পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের নাগরিক সেবা বাড়ানোসহ সরকারের নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ সুধী সমাজের। তবে কোথাও দায়িত্বের অবহেলা নেই বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
 
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, শুধু নামমাত্র দায়িত্ব পালন করাটা জনগণের দুর্ভোগের কারণ হবে। দ্রুত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
 
 
ঝালকাঠি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার বলেন, আমাদের কোনো গাফেলতি নেই। পৌরবাসীকে যথাসাধ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি আমরা। যখন যা প্রয়োজন তা করছি আমরা।  
 
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম শুভ্র বলেন, জন্মনিবন্ধন নিয়ে প্রথমে কিছুটা ভোগান্তি থাকলেও এখন আমরা সব আইডি পাসওয়ার্ড পেয়ে গেছি। দ্রুত সবার কাজগুলো সম্পন্ন করা হচ্ছে। কোথাও কোনো ধরনের ভোগান্তির সুযোগ নেই।
 
বরিশাল সিটি করপোরেশনে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিভাগীয় কমিশনারকে। এছাড়া পৌরসভাগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও সহকারী কমিশনার পদের কর্মকর্তারা।


 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন