পাথরঘাটায় ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে জখম


বরগুনার পাথরঘাটায় দুপক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মহিউদ্দিন সিকদার বাবু (২৫) নামের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএফডিসি বাইপাস সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে বাবু জখম হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে পাথরঘাটা পৌরসভার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলে শুরু হলে পৌরশহরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ করে।
মহিউদ্দিন সিকদার বাবুর শরীরে ১০ টির বেশি কোপ দেওয়া হয়েছে বলে জানান পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা মাসুদ রানা। তিনি বলেন, বাবুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১০ টির বেশি ধারালো অস্ত্রে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর অবস্থা খুবই গুরুতর।
তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মহিউদ্দিন সিকদার বাবু উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপির সাবেক সদস্য জাহারুল সিকদারের ছেলে।
বাবু পৌর ছাত্রলীগের সাবকে সদস্য ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের সমর্থক বলে জানান পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইনাম।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার সমর্থক সুমন শীল, সাবেক ইউপি সদস্য হেলাল ও ইলিয়াস হোসেনসহ প্রায় ৮ থেকে ১০ জন।
আহত বাবুর চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকন শহীদ বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকির ইন্ধনে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে সুমন শীল, হেলাল মেম্বার ও ইলিয়াসসহ ৮ থেকে ১০ জন মিলে বাবুকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রাখে।
স্থানীয় লোকজন বাবুকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
এরপরই পাথরঘাটা পৌর শহরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন উত্তেজিত থাকলে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে বলে জানান আকন শহীদ।
বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং অপরাধীদের বিচার চেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি বলেন, মূল অপরাধীদের আড়াল করতেই একটি মহল রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় জড়াচ্ছে।
তিনি অপরাধীদেরকে অতি শিগগিরই আইনের আওতায় আনতে পুলিশকে অনুরোধ করেন এবং আহত পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন। বরগুনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোজাম্মেল হোসেন জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিক পাথরঘাটায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।
এ নিয়ে পাথরঘাটা উত্তেজিত ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযুক্তদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অপরাধীদের আড়াল করতে রাজনৈতিক কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে মোজাম্মেল হোসেন বলেন, চাপ থাকতে পারে, তবে পুলিশের আইন প্রয়োগে কোনো ধরনের চাপ নেই।
এইচকেআর
