ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

বরগুনায় ঝাঁকে ঝাঁকে মিলছে ইলিশ, দাম চড়া

বরগুনায় ঝাঁকে ঝাঁকে মিলছে ইলিশ, দাম চড়া
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

নিষেধাজ্ঞার পর ফের সরব হয়ে উঠছে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণকেন্দ্র। প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে এখানে। গত সাতদিনে এ অবতরণকেন্দ্রে প্রায় ১০০ মেট্রিকটন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে ৭০ মেট্রিকটনই ইলিশ।

সমুদ্রে বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ায় ভালো দাম পাচ্ছেন জেলেরা। মাছের সরবরাহ ভালো থাকলেও চাহিদা রয়েছে প্রচুর। সরাসরি ঘাট থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে মাছ। এর কারণে স্থানীয় বাজারে বেশি দামে ইলিশ কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

ক্রেতাদের অভিযোগ, মাছের সরবরাহ যথেষ্ট হলেও ব্যবসায়ীরা দাম কমাচ্ছেন না। মূলত সিন্ডিকেটের কারণেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। এভাবে চলতে থাকলে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে ইলিশের দাম।

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার পরপরই সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় দারুণ খুশি তারা। একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে ঘাটে। ট্রলারের খোন্দল (ইলিশ সংরক্ষণের কোটর) থেকে ঝাঁপি বোঝাই করে ইলিশ অবতরণ কেন্দ্রে দেখে স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গেলো বছরের চেয়ে এবার মাছের সরবরাহ বেশি। দামও বেশি। আর এ সময়ে ইলিশের চাহিদাও থাকে বেশি। স্থানীয় বাজারে তুলনায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

বরগুনার পৌর মাছ বাজারে আসা আরাফাত জানান, মৌসুমে ইলিশসহ সামগ্রিক মাছের দাম কম থাকার কথা। কিন্তু এখানে এসে ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম চায় এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, একটু ছোট ইলিশের দাম চায় কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা। সর্বশেষ ২০০ গ্রাম ও তার নিচের মাছ বিক্রি হয়েছে সাড়ে চারশো থেকে ৫০০ টাকা কেজি। যা অন্যান্য সময় বিক্রি হত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি।

এমবি বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি মো. রহমান মিয়া বলেন, গতকাল সাগর থেকে প্রচুর ইলিশ বোঝাই করে নিয়ে এসেছি। সরকারের বিভিন্ন সময় নিষেধাজ্ঞা মানার কারণে এত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। পাঁচ হাজার ইলিশ নিয়ে দ্রুত ঘাটে ফিরেছি। ইলিশের সাইজ তুলনামূলক ভালো। আবার সাগরে যাওয়ার জন্য নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

মাছ ব্যবসায়ী মো. রফিক হোসেন জানান, ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই জেলেরা অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে বেশি দামে ইলিশ কিনতে হচ্ছে আমাদের। ইলিশ কিনে দ্রুত তা প্যাকেটজাত করে গাড়িতে তুলে দিচ্ছে। এক কেজির বেশি ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায়, মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়।

মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার বলেন, জেলেদের কাছ থেকে মাছ কেনার পর অল্প কিছু ব্যবসা রেখে বিক্রি করি। খুচরা বাজারে গিয়ে মাছের দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের কিছু করার থাকে না।

বরগুনা পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের সহকারী বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিপন হোসেন বলেন, সমুদ্রের মাছের উৎপাদন বাড়ায় রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। এ অবতরণকেন্দ্রে বিক্রিত মাছের দামের শতকরা ১.২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করে সরকার।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ভরা মৌসুমে ইলিশের দাম কেন এতো বেশি সে রহস্য খুঁজ পাচ্ছি না। জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে এর সমাধান খুঁজছি আমরা।
 


আরজেএন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন