উচ্চ আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন পটুয়াখালীর ওসি-এএসআই


উচ্চ আদালত থেকে এক মামলায় আগাম জামিনপ্রাপ্ত কলেজছাত্র আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে পটুয়াখালী পুলিশ। ওই ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, পটুয়াখালী থানা পুলিশের ওসি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান।
গতকাল রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে হাজির হয়ে তারা আইনজীবীর মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
ভুক্তভোগীর আশরাফুল হাওলাদারের পক্ষে পক্ষে আদালতে ছিলেন, আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আবু রেজা কাইয়ুম খান এবং শারমিনা হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের সময় জামিনে থাকার বিষয়টি তার আইনজীবী পুলিশ সদস্যদের ফোন করে জানিয়েছিলেন বলে আদালতে তথ্য দেন আইনজীবীরা। এমন তথ্য জানালে তার কল রেকর্ড তলব করেন আদালত। তবে আইনজীবী বিটিআরসির কাছে কল রেকর্ড চাইলে আদালতের আদেশ ছাড়া দেবে না বলে জানান। তখন আদালত আবার শুনানির জন্যে আজ ২৪ জুলাই দিন ঠিক করেন।
আইনজীবী আবু রেজা কাইয়ুম খান বলেন, আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের কোনো ইনটেশন ছিল না। তাছাড়া সে সময় তারা আদালতের জামিন সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্টও দেখাতে পারেনি। তারপরও আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আদালত আজ সোমবার শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছেন।
‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার, আদালতে মুক্তি’ শিরোনামে গত ২০ মে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি পরদিন আদালতের নজরে আনেন উচ্চআদালতে আসামিপক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা।
এরপর ২১ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ব্যাখ্যা জানাতে পটুয়াখালী থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুরকে গত ১৮ জুন আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রুল জারি করেন আদালত। ধার্য তারিখে তারা আদালতে হাজির হন। আগের ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে।
১৮ জুন হাইকোর্টে শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছিলেন, যখন ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন আসামি তাকে ফোন দেন। আসামির ফোনে এসআইয়ের সঙ্গে তার কথা হয়। আসামি আগাম জামিনে আছেন, জানানো স্বত্বেও তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় নেওয়ার পর ওসিকে ফোন দেওয়া হয়। তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন রেখে দেন। ‘ফোন রেকর্ড তলব করব’ ফোনে কল দেওয়ার প্রসঙ্গটি আজ শুনানিতে ওঠে। আসামিপক্ষের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনি টেলিফোন করেছিলেন?’
তখন আলী আহসান মোল্লা বলেন, দারোগা সাহেবের সঙ্গে আসামির ফোনে কথা বলেছিলাম। বিটিআরসিতে গিয়েছিলাম। বলেছে, কোর্টের আদেশ থাকলে কল রেকর্ড দেওয়া হবে। ব্যক্তিগতভাবে দেওয়ার সুযোগ নেই। আদালত বলেন, আমরা রেকর্ড কল (তলব) করব। আপনি আজ সোমবারের মধ্যে এ বিষয়ে (কথোপকথনের রেকর্ড) হলফনামা দাখিল করবেন। দুই পুলিশ কর্মকর্তার আইনজীবী আবু রেজা কাইয়ুম খানের উদ্দেশে আদালত বলেন, হলফনামা দেবে, আমরা দেখি। সোমবার পরবর্তী দিন রাখা হলো। তখন পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনজীবী বলেন, তাদের কি সোমবার উপস্থিত থাকতে হবে? আদালত বলেন, উপস্থিত থাকতে হবে।
আরজেএন
