বরিশাল সিটি নির্বাচন: বিএনপির আজীবন বহিষ্কারের তালিকায় রুপণ


এতোদিন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপণ ‘বিএনপির কেউ নন’ বলে দাবি করলেও এবার তাঁকেই বহিস্কারের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তিনি ছাত্রদলের সাবেক নেতা। এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশ নেয়া রুপণসহ দলের প্রায় ২০ জনের নামের তালিকা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় এদের বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল বিএনপির একাধিক নেতাকে ফোন করা হলেও স্পষ্ট কেউ কিছু বলতে চাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা জানিয়েছেন, নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত বহুদিন আগের। এরপরও যেসব নেতা-কর্মী নানা কৌশলে দলীয় এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, কেন্দ্র থেকেই এ তালিকা করা হয়েছে।
নগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, রুপণ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন। কিন্তু বরিশালের রাজনীতিতে তিনি কখনোই সম্পৃক্ত ছিলেন না। কিন্তু বর্তমানে তিনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে কৌশলে বিভিন্ন ভাবে ভোট চাইছেন। যা দলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এজন্য রুপণের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে আজীবন বহিস্কার করা হতে পারে বলে কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, কাউন্সিলর হিসেবে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সাবেক ও বর্তমান ১৯ জনের মধ্যে ৩ জন নারী। এর সঙ্গে রুপণসহ আরো দু‘একজনের নাম যুক্ত হতে পারে।
বহিস্কারের তালিকায়- ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থক সৈয়দ হাবিবুর রহমান ফারুক, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপু, ৮ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর বিএনপির সদস্য সেলিম হাওলাদার, ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ও মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির লিংকু।
১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান মাসুম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের আবদুল্লাহ সাদী, জেলা তাঁতী দলের সাবেক সভাপতি কাজী শাহীন ওরফে মোহন এবং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।
এছাড়া ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ্ আমিনুল ইসলাম আমিন, ২২ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সামাদ শিল্পী। যিনি ওই ওয়ার্ডে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা মহানগর বিএনপির সদস্য আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিমের স্ত্রী।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
এছাড়া সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য জাহানারা বেগম, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য সেলিনা বেগম, ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য রাশিদা পারভীন এবং ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক নেত্রী মজিদা বোরহানের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কামরুল আহসান রুপণ বলেন, আমি তো বিএনপির কেউ না। তাহলে বহিস্কারের প্রশ্ন আসে কীভাবে। তিনি বলেন, আমার বাবা ও আমি সারাজীবন বিএনপি করেছি। তাই যারা বিএনপিকে ভোট দেয়, তাদের কাছে ভোট চাইতেই পারি।
কামরুল আহসানের বাবা আহসান হাবিব কামাল বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। গত বছর (২০২২ সালে) তিনি মারা যান। ২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আহসান হাবিব কামাল।
আরজেএন
