বঙ্গোপসাগরে আবারো ডাকাতি, উৎকণ্ঠায় জেলেরা


দীর্ঘদিন পর আবার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি শুরু করেছে দস্যুরা। গত এক মাসে বিচ্ছিন্নভাবে ১০টির মতো ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। এতে তিন জেলের মৃত্যু ও তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
এর মধ্যে গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য বন্দর থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের গভীরে পাথরঘাটার টিন বাদশাহর মালিকানাধীন এফবি ভাই ভাই ট্রলারের আট জেলেকে জিম্মি করে মারধর করে মাছ, জাল, তেল, মটর, সেলফ, ব্যাটারিসহ ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
বারবার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় উপকুলীয় জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাগরে যাওয়ার জেলের অভাবে ট্রলারে বাজারঘাট করেও মালিক ট্রলার সাগরে পাঠাতে পারছে না। এফবি ভাই ভাই ট্রলারের মালিক টিন বাদশাহ জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে করে ঘাটে ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হলে অন্য দুটি ট্রলারের সহযোগিতায় মেরামতের জন্য কক্সবাজার ঘাটের দিকে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় কক্সবাজার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে হঠাৎ দুটি ট্রলার ধাওয়া দিয়ে এফবি ভাই ভাই ট্রলারটি আটক করে। তখন সহযোগিতায় এগিয়ে আসা অন্য ট্রলার দুটি তার ট্রলারটি ছেড়ে দিয়ে নিরাপদে চলে যায়।
এ সময় ২৫ থেকে ৩০ জন ডাকাত ট্রলারে উঠে লাঠি ও পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং রামদা ও কুঠার দিয়ে কুপিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে জাল তেলসহ সব মালামাল লুটে নেয়। তাদের কাছে দুটি বন্দুক দিয়ে গুলি করার ভয় দেখায়। ডাকাতদের মারপিটে ট্রলারের মাঝি আমির হোসেন, সাহাবুদ্দিন, লিটন, হাসান, জাহাঙ্গীর, হোসেন আলী ও আবদুল্লাহ আহত হয়েছেন।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ট্রলারের মাঝি আমির হোসেনের বরাত দিয়ে জানান, ডাকাতরা এর আগেও আরও সাতটি ট্রলার ডাকাতি করে সাত মাঝিকে অপহরণ করে তাদের ট্রলারে উঠিয়ে ট্রলারসহ অপহরণ করতে চায়। কিন্তু ভাই ভাই ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল থাকায় আবার সাত জেলেকে ডাকাতদের ট্রলারে তুলে নিয়ে এফবি ভাই ভাই ট্রলারটি ছেড়ে দেয়।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন ফরাজি জানান, বারবার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার উপকুলীয় হাজারও জেলে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। যদি এদের থামানো না যায় তাহলে জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে নদীর ব্যবসা ছেড়ে দেবে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ স্টেশন কোস্টগার্ড কমান্ডার লে. শাফায়াত আবরার জানান, বিষয়টি আমরা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি থেকে জানতে পেরেছি। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
র্যাব-৮ কোম্পানি কমান্ডার তুহিন রেজা জানান, কক্সবাজারের ঘটনা শুনেছি। যদিও ঘটনা আমার এলাকার না তবু বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং র্যাব-৭-কে জানানো হয়েছে।
এইচকেআর
