ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

Motobad news

বিএনপির ‘রেইনবো নেশন’ পরাজিত শক্তিকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা: ১৪ দল

বিএনপির ‘রেইনবো নেশন’ পরাজিত শক্তিকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা: ১৪ দল
আজ বুধবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র এবং সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর ইস্কাটনের বাসায় জোটের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন হয়।
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

মুক্তিযুদ্ধের পর দালাল আইন বাতিল করে জিয়াউর রহমান যেভাবে যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি ও সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেভাবে ‘রেইনবো নেশন’ ও ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশনের’ মাধ্যমে বিএনপি আরেক দফায় তাঁদের প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগের নেতত্বে ১৪ দলীয় জোট।

আজ বুধবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র এবং সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর ইস্কাটনের বাসায় জোটের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘১৪ দল কখনই একাত্তর ও পচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে ‘রিকনসিলিয়েশনের নামে, ‘রেইনবো নেশন’ নামের এই সুচতুর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। এই দুটি প্রশ্ন বহু আগেই মিটমাট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে করার কোরো প্রয়োজন নাই।’

সংবাদ সম্মেলনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘২৭ দফা একাত্তর সালে মীমাংসিত বিষয়গুলোকে অমীমাংসিত করার সুকৌশল দলিল। এটা রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের ঐক্যের কালো দলিল। এ দলিল যারা সমর্থন করছে তারা আর যাই হোক বাম বা প্রগতিশীল ঘরানার লোক হতে পারে না, তারা বিচ্যুত।’

রাষ্ট্র কাঠামো ‘মেরামতে’ বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখারাষ্ট্র কাঠামো ‘মেরামতে’ বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানতো মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু সে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নামে খিচুড়ি তত্ত্ব চাপিয়ে দিয়ে রাজাকার ও জামায়াতকে পুর্নবাসন করেছিল, রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি ধ্বংস করেছিল। তাই ২৭ দফা ও ১০ দফা কার্যত বহাত্তরের সংবিধানকে বানচাল করার সুকৌশল প্রস্তাব। যারা এটা সমর্থন করে তারা গণতান্ত্রিকও না, প্রগতিশীলও না।’

আওয়ামী লীগের জোট সরকারের সাবেক তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্র মেরামতের নামে কার্যত বাংলাদেশে রাজাকারদের আমদানি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সেই আন্দোলনে যদি কোনো রাজনৈতিক নেতা থাকেন- তিনি মুক্তিযোদ্ধা হোন কিংবা কোন বামপন্থী হোন- তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে কুলাঙ্গার, তার সঙ্গে লেনদেন হতে পারে না।’

বিএনপির ২৭ দফাকে ‘সাংবিধানিক ধারা বানচাল করার প্রস্তাব’ আখ্যা দিয়ে ইনু আরও বলেন, ‘জামায়াত, জঙ্গি, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে রাজনৈতিক পার্টনারশিপ থাকবে, ততদিন পর্যন্ত ২৭ কেন, ২৭০ দফা দিলেও তা আমলযোগ্য নয়।’

আওয়ামী লীগ নেতা আমু বলেন, বিএনপি সংবিধানের মৌলিক সংশোধনের যে কথা বলছে তার মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের আমলের সামরিক শাসনের বিধানে ফিরে যেতে চায়। তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলকে নিষ্কণ্টক করতে চায়।

বিএনপির এই ২৭ দফার পাল্টায় ১৪ দলের জোটগত কর্মসূচি থাকবে কিনা জানতে চাইলে আমু বলেন, ‘আমরা আমাদের রাজনৈতিক ধারা নিয়ে মাঠে থাকব। এই ধারার বিপরীত অবস্থানে বিরোধিতা করব। তারা এর আগে ১০ দফা, ১৪ দফাসহ বিভিন্ন ধরণের দফা দিয়েছিল, এগুলো নতুন কিছু না। তাদের এ আন্দোলন নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই।’

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে ‘প্রগতিশীল’ সংগঠনের অংশগ্রহণ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বা প্রগতিশীল হলে জামায়াতের সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করত না। যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়, তারা প্রগতির ধারার মধ্যে আছে বলে মনে করি না- এটা স্পষ্ট। তারা বিভিন্ন সময় বিএনপির আন্দোলনকে সমর্থন করে নিজের চেহারা ফুটিয়ে তুলেছিল।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতিকে ‘বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট’ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে দাবি করে মেনন বলেন, ‘তারা বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল, গতকাল (মঙ্গলবার) জিজ্ঞেস করেছিলাম, উত্তরে বলেছিল, ওই দলগুলো বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সঙ্গে আর নাই।’


 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন