ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত বিশ্বজয়ী মেসিরা


এজেইজা মিনিস্ট্রো পিস্তারিনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে লাখো লাখো মানুষের ভিড়। মানুষে গিজগিজ করছিল বুয়েন্স আয়ার্সের মূল সড়কগুলো। আগে থেকে নেমে পড়া মানুষের ভিড়ে যারা মূল রাস্তায় আসতে পারেননি, তারা অবস্থান নেন অলি-গলিতে।
অধীর আগ্রহ আর অপেক্ষায় কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। কখন দেশে আসবেন মহানায়ক লিওনেল মেসি, কখন দেশের মাটিতে পা রাখবেন মহাবীরের সহযোদ্ধারা, কখন আসবে স্বপ্নের সোনালি ট্রফি।
অবশেষে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয় আর্জেন্টাইনদের অপেক্ষার প্রহর। আর্জেন্টিনায় তখন রাত আড়াইটা। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে তারা ভুলে গেছেন রাত আর দিনের ব্যবধান।
১৯৮৬ সালে ঠিক এভাবেই ট্রফি হাতে দেশে ফিরেছিলেন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। তিন যুগ পর প্রায়ত কিংবদন্তির শিষ্য লিওনেল মেসি বিমান থেকে বের হয়ে আসেন। তার হাতে সেই সোনালি ট্রফি, সঙ্গে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে নায়ক লিওনেল স্কালনি। একে একে বিমান থেকে নেমে আসেন মেসির বীর সহযোদ্ধারা। ধীর পায়ে হেঁটে ওঠেন ছাদখোলা বাসে।
স্বপ্নের ট্রফিসহ বিশ্বজয়ীদের দেখে শুরু হয় জনতার জয়ধ্বনি। ‘ভামোস আর্জেন্টিনা’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় বুয়েন্স আয়ার্সে আকাশ। এরপর যাত্রা শুরু করে ছাদখোলা বাস। বুয়েন্স আয়ার্সের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে যার গন্তব্য ওবেলিস্ক। আর সেটাই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু। যেখানে দেওয়া হবে মেসিসহ বিশ্বজয়ীদের সংবর্ধনা।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ১ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ অ্যাপের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা দলটিকে বহন করা বিমানের অবতরণের দিকে নজর রেখেছিলেন। বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করছিল বিশেষ বাস। সেখানে লেখা ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’। সেই বাসে করে বিমানবন্দরের বাইরে বের হয়ে আসেন মেসিরা।
ছাদখোলা বাস ধীরে ধীরে এগিয়ে চলে। রাস্তার দুই পাশ থেকে ভেসে আসতে থাকে মানুষ আনন্দ চিৎকার। ছাদখোলা বাসে মেসি আর তার সতীর্থেরা কখনো ট্রফি উঁচিয়ে ধরছিলেন আবর কখনো উড়ন্ত চুমো দিচ্ছিলেন ফুটবল-পাগল মানুষগুলোর দিকে। মেসিদের ছাদখোলা বাস আর আর হাজার হাজার মানুষ যাত্রা বুয়েন্স আয়ার্সের কেন্দ্রস্থল ওবেলিস্কের দিকে।
রাজধানীর এই স্মৃতিস্তম্ভটি নানা ক্রীড়া বিষয়ক অর্জনের পর উদযাপনের জন্য ঐতিহ্যবাহী স্থান। আর্জেন্টাইনদের আনন্দ উৎসব যে থাকবে না, আগেই তা বুঝতে পেরে সাধারণ ছুটির ঘোষণা দিয়ে ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ।
ফুটবল দলের খারাপ সময়ে পাশে ছিলেন ফুটবল ভক্তরা। এবার ভালো সময়ে ঠিকই ছুটে এসেছেন সেইসব ফুটবলপ্রেমীরা। ট্রফি হাতে মেসির সেই আইকনিক হাসি দেখার স্বপ্ন নিয়ে বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছেন ভক্তরা। সেই স্বপ্নপূরণের পর ভক্তরা বলতেই পারেন লিও, সার্থক করেছে আমাদের জনম, তাই তোমাকে ধন্যবাদ।…
এএজে
