ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

Motobad news

ভোটে হেরে টাকা ফেরত চাইলেন প্রার্থী

ভোটে হেরে টাকা ফেরত চাইলেন প্রার্থী
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরে ভোটারদের কাছে টাকা ফেরত চেয়েছেন সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী রুবিনা আক্তার। ভোটারদের কাছে তার টাকা ফেরত চাওয়ার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে বাউফল উপজেলার বকুলতলা এলাকায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিসুর রহমানের কাছে টাকা ফেরত চাইতে যান রুবিনা আক্তার। আনিসুর রহমান উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার)। টাকা চাওয়া নিয়ে তার সঙ্গে রুবিনার বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে কে বা কারা ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি পুলিশ। 

এক মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে রুবিনা আক্তারকে বলতে শোনা যায়, ‌‘আমি সামর্থ্য অনুযায়ী ভোটারদের দুই হাজার করে টাকা দিয়েছি চা-নাশতা ও ভোটকেন্দ্রে যাওয়া-আসার খরচের জন্য। তারা টাকা নেওয়ার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমাকে ভোট দেবেন। কিন্তু তারা আমাকে ভোট দেননি। যারা আমাকে ভোট দেননি তাদের অনেকে টাকা ফেরত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, আপা আপনি মন খারাপ করবেন না। কিন্তু এই ইউপি সদস্য (আনিসুর রহমান) আমার টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। উল্টো আমাকে অপমান করেছেন। আমার গাড়ির চাবি নিয়ে গেছেন। ভিডিও করে ছড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। আপনারা জড়ো হওয়ার পর এখন টাকা ফেরত দিয়েছেন।’

ভিডিওতে ইউপি সদস্য আনিসুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘মেম্বাররা টাকা ফেরত দেওয়ার পরও রুবিনা আক্তার দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এজন্য তার গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাকে টাকা ফেরত দিয়েছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভোটার বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতি ভোটে হাজার হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রার্থী রুবিনা দিয়েছেন দুই হাজার টাকা করে। তার চেয়েও অন্য প্রার্থীরা বেশি দিয়েছেন। এজন্য তাকে না দিয়ে অন্য প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।’

এসব বিষয়ে জানতে রুবিনা আক্তারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। রুবিনার স্বামী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ফেসবুকে আমরা যা দেখি অনেক সময় তা সত্য হয় না। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও রুবিনার নয়। হয়তো কেউ ভিডিও তৈরি করেছেন।’

তবে টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে রুবিনা আক্তারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে পরে কথা বলবো।’

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘ভিডিওটি আমি দেখেছি। এ নিয়ে রুবিনা আক্তারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে তিনি কোনও অভিযোগ করেননি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘নির্বাচনে আর্থিক লেনদেন অবৈধ। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত আমরা কোনও অভিযোগ পাইনি।’

সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছিল। নির্বাচনে বাউফল-দশমিনা উপজেলায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী সদস্য পদে দোয়াত-কলম প্রতীকে কামরুন নাহার, হরিণ প্রতীকে পশারী রানী, টেবিলঘড়ি প্রতীকে ফাতেমা আলম ও ফুটবল প্রতীকে রুবিনা আক্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

তাদের মধ্যে দোয়াত-কলম প্রতীকে ১৪৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন কামরুন নাহার। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পশারী রানী হরিণ প্রতীকে পেয়েছেন ১২০ ভোট, ফুটবল প্রতীকে রুবিনা আক্তার পেয়েছেন ৩৬ ভোট এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকে ফাতেমা আলম কোনও ভোট পাননি।


এএজে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন