অসহায় ছাত্রীর করুন পরিনতি


পৃথিবীতে কেউ নাই আমাকে সাহায্য করার। নানানভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে কিছু করতে পারিনা। ওরা ভয়ানক। আমি অসহায় তাই আমাকে এমন পরিনতি ভোগ করতে হচ্ছে, আমি শাস্তি পাচ্ছি।
আমাদের টাকা পয়সা নাই। আইনী কোন পদক্ষেপও নিতে পারিনা। কদিন পরপরই হুমকি দেয় স্বামী বাচ্চাকে মেরে ফেলবে। যতদিন বাঁচবো ততদিন ক্ষতি করবে। যাকে পাবে তাকেই নাকি মারবে"।
এভাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগে ভর্তি বরিশাল হাতেম আলী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
রোববার (৩০ মে) সকালে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাটাদিয়া বাড়ৈকান্দি এলাকায় এই কলেজ ছাত্রীকে পরিবারের সামনে কুপিয়ে জখম করেন বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী খানের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান।
ওই ছাত্রী জানান, ২০১৫ সালে হাতেম আলী কলেজ ভর্তি হওয়ার পর কলেজে আসা যাওয়ার সময় কথা বলতে চাইতেন ইব্রাহিম খান নামে এক বখাটে মটরসাইকেল ড্রাইভার।
প্রেমের প্রস্তাব দেয়ায় রাজি না হওয়ায় নিজের আসল পরিচয় গোপন করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাতেও সায় না পেয়ে এই ছাত্রীকে রাস্তায় উত্তক্ত করা শুরু করেন ইব্রাহিম খান। বখাটের হাত থেকে বাঁচাতে এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে অভিভাবকরা পারিবারিকভাবে বরিশাল উপজেলার চরাদি ইউনিয়নের বলইকাঠি গ্রামের বাসিন্দা মিলনের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন।
বিয়ে হওয়ার পরে এই ছাত্রীর সংসার ভেঙে দেয়ার জন্য শশুর বাড়িতে গিয়ে নানান ভাবে বিরক্ত শুরু করেন ইব্রাহীম খান। এরপর কিছুদিন নিরব থাকলেও বিগত ৬ মাস ধরে মুঠোফোনে এক ছেলে সন্তানের মা এই ছাত্রীকে পূনরায় বিয়ের করার প্রস্তাব দেন ইব্রাহীম।
এতে রাজি না হওয়ায় ইতোপূর্বে কয়েক দফায় তাকে এবং তার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসেন তিনি। সর্বশেষ রোববার সকালে পরিবার নিয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাটাদিয়ায় যান ওই ছাত্রী।
সেখান থেকে ফেরার পথে ইব্রাহিম ৩/৪ জন নিয়ে কাটাদিয়া বাড়ৈকান্দি এলাকায় পথরোধ করে তার। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে ছুরি দিয়ে তার মুখমণ্ডল কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর ছোট ভাই শমীম জানান, আমাদের পরিবার ইব্রাহীমের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে আমার বোনের সর্বনাশ করেছে। আমাকেও মারার হুমকি দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
এইচকেআর
