ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

Motobad news
ভূমি প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে

কলাপাড়ায় প্রভাবশালীদের দখলে খাস পুকুর

কলাপাড়ায় প্রভাবশালীদের দখলে খাস পুকুর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলা মহিপুর ইউনিয়নের মহিপুর ভুমি অফিসের পাশে খাস খতিয়ানভুক্ত শতবর্ষী পুকুর দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও ময়লা আর্বজনার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। দীর্ঘ দিন সংস্কার না করায় পুকুরটি প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এ সুযোগে ভূমি অফিসের এক শ্রেনির অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে স্থানীয় লোকজন দখল করে নিয়েছে। এটি বাজার পুকুর নামে বেশ পরিচিতি। 

পয়ঃবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য, হোটেল ও বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলার কারনে পুকুরটি ক্রমে ক্রমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই জবর -দখল অস্তিত্ব সংকটে পড়বে এক সময়ের দৃষ্টিনন্দন পুকুরটি। এ দিকে সরকারি ভুমি অফিসের পাশে নিবিঘ্নে দখলদারদের স্থাপনা নির্মানে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কথা উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মহিপুর ভুমি অফিসের ২৫-৩০ গজ দুরেই চলছে এমন দখল কার্যক্রম। এতে করে উপজেলা প্রশাসন ও ভুমি অফিস কর্মকর্তারা নিরব ভুমিকা।

মহিপুর ভুমি অফিস সুত্রে জানা গেছে, পুকুরের আয়তন ৫২ শতক। ৪০৯০ নম্বর দাগে পুকুরে পড়ে রয়েছে ৩১ শতক জমি। আর ৮৪ শতক খাস জমি এখন দখলদারদের দ্যেরাত্যের হারাতে বসেছে। দখলদারদের দখল তান্ডবে ৫২ শতক আয়তনের পুকুরটি এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। পুকুরের চার দিকে পাড়েরর ৩১ শতক খাস জমিতে তোলা হয়েছে স্থাপনা।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাপড়াভাঙ্গা খালের ওপর (শিববাড়ীয়া নদী) ব্রিজ হওয়ার সময় যখন বাইপাশ সড়ক করা হয় তখন কিছু বালু পুকুরে পড়ে পুকুর ভরাট হয়। এর পর বাজার ব্যবসায়ীকদের পয়ঃবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য, হোটেল ও বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলার কারনে পুকুরটি ক্রমে ক্রমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ভূমি অফিসের এক শ্রেনির অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে চান্দিনা ভিটি দিয়ে দাখিলা দেয় ব্যবসায়ীদের। 

হোটেল ও বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলার কারনে দুর্গন্ধে দোকানদার ও ক্রেতারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। অপর দিকে এক শ্রেনির প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পুকুরের পাশের জমি রাতারাতি দখল করে নিচ্ছে। বাজার পুকুরটি প্রভাবশালী দখল করে নেয়ার খবরটি এখন সর্বত্র আলোচিত রয়েছে। 

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ জেলা উপজেলা ভূমি প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে এক মাত্র বাজার পুকুরটি সরকারি সম্পতি বেহাত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওই পুকুরের পানি এক সময় স্বচ্ছ টকবগে থাকতো ও গোসল এবং রান্নার কাজে ব্যবসয়ীরা ব্যবহার করতো। মৎস্য বন্দর মহিপুর হাজার হাজার জেলেরা ওই পুকুরের পানিতে গোসল দিত ও বঙ্গোপসাগরে ওই পানি নিয়ে যেত ও রান্নার কাজে ব্যবহার করতো।    

এক ক্রেতা মো. জলিল বলেন, ‍ঐতিবাহী মহিপুর বাজার থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার হাট বসে। ওই দিন বাজারে হাজার লোকের সমাগম ঘটে। আস পাশ এলাকার লোকজন সাপ্তাহিক বাজার করে এ বাজার থেকে কিন্তু দুঃখের বিষয় বাজারটি অনেক জায়গা নিয়ে বাজার মিলতো। দখলদারদের প্রভাবের কারনে বাজারটি সংকচিত হয়ে আসছে। শেষ পর্যন্ত বাজারের পুকুরটি ভূমি অফিসের এক শ্রেনির অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দখলে মেতে উঠেছে।  গৃহস্থালি বর্জ্য, হোটেল ও বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলার কারনে রোড দিয়ে বাজার দিন চলফেরা করা যায়না। নাক হাত দিয়ে চেপে ধরে হাটতে হয় দুর্গন্ধে দোকানদার ও ক্রেতারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

মহিপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, আগামী বাজার সমিতি মিটিং অবৈধভাবে যারা দখল করে পুকুরে জায়গা দখল করে নিচ্ছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।   

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, কেহ যদি অবৈধভাবে পুকুর দখল থাকে তাহলে আমরা প্রশাসনের পক্ষে থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
 


মো. এনামুল হক/এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন