বাউফলে পূর্বের সড়কের চেয়ে নতুন সড়ক দেড় ফুট নীচু, পানিতে থলিয়ে দুর্ভোগ


মাটির সড়ক কার্পেটিং সড়ক হচ্ছে। মাটি কেটে (বক্সকাটিং) বালু ও ইট-সুরকি দিয়ে আগের সড়কের চেয়ে বেশি উচ্চতা এবং পাশের সড়কের সমান উচ্চতায় সড়ক নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। আগের সড়কের উচ্চতার চেয়ে প্রায় দেড়ফুট নিচু করে সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কারণে সড়কটি পানিতে তলিয়ে থাকছে। এতে মানুষের উপকোরের চেয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে।
এমন চিত্র পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের নরের সড়ক থেকে শাহাজাহান সিকদার বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কের।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরের দরপত্রের মাধ্যমে এক কিলোমিটার ওই সড়কটি নির্মাণের দায়িত্ব পান নিজাম এন্টার প্রাইজ নামে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৮৪ লাখ ৫৭ হাজার ২৪৫ টাকা নির্মাণ ব্যয় চুক্তিমূল্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কাজটি করছেন সুধীর নন্দী। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য।
সরেজমিনে দেখা গেছে,নরের সড়কের শাখা সড়ক এই সড়কটি। সড়কটির অধিকাংশ জায়গা পানিতে তলিয়ে আছে। ম্যাকাডাম (ইটের বড় খোয়া) দেওয়া হয়েছে, যা খুবই নিন্ম মানের। যে কোনো সময় কার্পেটিং করা হবে। নির্মাণাধীন সড়কটির বেশিরভাগ অংশ নরের সড়ক ও ওই এলাকার বাড়ির আঙিনা থেকে প্রায় দেড় ফুট নীচু। এ কারণে বৃষ্টি হলেই সড়কটি তলিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,যখন মাটির সড়ক ছিল। তখনও বৃষ্টির সময় পানিতে তলিয়ে যেত না। মাটির সড়কের চেয়ে প্রায় দেড় ফুট নিচু করে সড়কটি নির্মাণ করায় বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকার প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীসহ পাঁচ শতাধিক মানুষের।
মো. সাগর (৪০) নামে এক ব্যক্তি বলেন,সঠিকভাবে মাটি কাটা (বক্সকাটিং) হয়নি। সড়কটিতে যে খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে, তা ছিল খুবই নিন্ম মানের। নাম মাত্র রোলার করা হয়েছে। এ বিষয়ে এলজিইডি কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। কারণ যিনি কাজটি করছেন সেই সুধীর নন্দী নিজেকে সব মহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একমাত্র সেই প্রভাবের কারণে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
নিজাম এন্টার প্রাইজের মালিক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন,‘কাজটি আমার করার কথা। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজ মহোদয় তাঁকে (নিজাম) ফোন করে সুধীর বাবুকে কাজটি দিতে বলেছেন। সাংসদের সম্মানার্থে সুধীর বাবুই কাজটি করছেন। অনিয়ম হলে দায় আমার ওপর এলেও আপনারা একটু উপজেলা প্রকৌশলীকে জানান।’
এ বিষয়ে সুধীর নন্দীর মুঠোফোনে কল করলে তিনি ধরেননি। ক্ষুদেবার্তা দিলেও তিনি সাড়া দেননি। সড়কটির নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন,‘সড়কটির যেসব জায়গা নিচু হয়েছে ওইসব জায়গা উচু করার জন্য বলা হয়েছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন বলেন,‘নরের সড়কের চেয়ে নিচু কিংবা আগের সড়কের চেয়ে নিচু হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এইচকেআর
