২৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে জিম্বাবুয়ে


তামিমের ঝড়ো ব্যাটিং। বিজয়ের সঙ্গে দারুণ শুরু। মনে হয়েছিল আজও ৩০০ পেরিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তবে সব সকাল সারাদিনের পূর্বাভাস দিয়ে যায় না। তামিমের বিদায়ের পর যেন থমকে যায় রানের চাকা। তবে রিয়াদ ও আফিফের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ২৯০ রান পর্যন্ত তুলতে সক্ষম হয়েছে টাইগাররা। আগের ম্যাচে ৩০৪ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে জেতা জিম্বাবুয়েকে আজ ২৯১ রানের টার্গেট দিল টাইগাররা।
শুরুটা দারুণ করেছিলেন তামিম ইকবাল। ৪৫ বলে ৫০ করে ফিরে যাওয়ার আগে ১০ টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। ১১১.১১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ৪৬ রানই আসে তার বাউন্ডারি থেকে। বাংলাদেশও পাওয়ার প্লেতে পায় ৬২ রান। তবে তামিমের ৪৫ বলের মধ্যে ৩০টি বলই ছিল ডট। আর পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ খেলে ৪০টি ডট বল। বাউন্ডারির কারণে টাইগার অধিনায়কের স্ট্রাইক রেটে খুব একটা প্রভাব পড়েনি।
তবে ক্যারিয়ারের ৫৫তম অর্ধশতকের পর বেশিক্ষণ টিকেননি তামিম। ফিরে যান টানাকা চিভাঙ্গার শর্ট বলে পুল করতে গিয়েছিলেন তামিম, পেছনের পায়ে ভর দিয়ে। তবে সেটি গেছে মিডউইকেটে থাকা তাকুদজোয়ানাশে কাইতানোর হাতে।
তামিমকে যেন ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন আনামুল হক বিজয়। তবে দুর্ভাগ্য তার ইনিংসটি বড় করতে দেয়নি। নাজমুলের শটে আউট হয়ে ফিরেন বিজয়! ১৩তম ওভারে জিম্বাবুয়ের পেসার তানাকা চিভাঙ্গাকে স্ট্রেট ড্রাইভ খেলেন নাজমুল হোসেন। বল চিভাঙ্গার হাত ছুয়ে নন স্ট্রাইকের স্টাম্প ভেঙে দেয়। ওই প্রান্তের ব্যাটসম্যান এনামুল ততক্ষণে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান। রান আউট হয়ে ফিরে যেতে হয় বিজয়কে।
বিজয়ের বিদায়ের পর যেন রানের গতি কমতে থাকে। শান্ত ও মুশফিক মিলে গড়েন ৫০ রানে জুটি। ৬৪ বলে সে জুটি গড়েন তারা। তবে জিম্বাবুয়ের বাজে ফিল্ডিংও সেখানে শাপে বর হয়েছিল যেন। বাংলাদেশের ইনিংসে প্রথম ওভারেই তামিম ইকবালের ড্রাইভ আটকাতে পারেননি জিম্বাবুয়ের ফিল্ডার। সহজেই বলটি ধরতে পারতেন। পরে ৩০ গজ বৃত্তের ভেতর আরও কিছু ফিল্ডিং মিস করেছে স্বাগতিকেরা। ১৭তম ওভারেও নাজমুল হোসেনের ড্রাইভও জিম্বাবুয়ের ফিল্ডারের হাতের ভেতর দিয়ে বের হয়ে চার হয়। যা ছিল দৃষ্টিকটু!
মাধেভেরের ঝুলিয়া দেওয়া বলে স্লগ সুইপ করেন মুশফিক, ধরা পড়েন মিডউইকেটে থাকা মুনিয়োঙ্গার হাতে। ৩১ বলে ২৫ রান করেই ফিরলেন তিনি, আগের ম্যাচে ফিফটি পেলেও এবার থামলেন আগেভাগেই। মাধেভেরে নিয়েছেন ভালো ক্যাচ। ৫০ রানেই থামে নাজমুলের সঙ্গে মুশফিকের জুটি।
এরপরই যেন ভুল বুঝাবুঝির আরও নজির তৈরি হয়। পরপর জীবন পান রিয়াদ ও শান্ত। তামিমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল আনামুলের, যদিও তামিম বেঁচে গিয়েছিলেন তখন। এরপর নাজমুলের বোলারস ব্যাক ড্রাইভে রানআউট হয়ে ফিরতে হয়েছে আনামুলকে। এরপর রানআউটের হাত থেকে বেঁচে যান মাহমুদউল্লাহ। লুক জঙ্গুয়ের বলে পয়েন্টে ঠেলেই সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। মাধেভেরের থ্রো সরাসরি স্টাম্প ভাঙলে ফিরতে হতো তাঁকে।
সে যাত্রায় রিয়াদের পর রক্ষা হয় শান্তরও। হুট করেই সামনে এসে খেলতে গিয়েছিলেন নাজমুল। বলের পিচিংয়ের জায়গায় ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারেননি, আগবাড়িয়ে খেলা শটটা উঠে যায় আকাশে। মিড অনে থাকা ব্র্যাডলি এভান্স পেছন ছুটেছিলেন, তবে বলের গতিপথে যেতে পারেননি ঠিকঠাক। শেষ মুহুর্তে ডাইভ দিয়েও নাগাল পাননি। তবে একটু এদিক ওদিক হলেই জিম্বাবুয়ে পেতে পারত আরেকটি উইকেট। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। শান্তকে থেমে যেতে হয়েছে ৩৮ রানেই। ফেরার আগের বেশ খানিকটা সময় নড়বড়েই মনে হচ্ছিল তাকে। ক্যারিয়ার সেরা এই ইনিংসটি খেলেছেন ৫৫ বলে। ছিল ৫টি চারের মার।
এরপর আফিফ ও রিয়াদ ত্রাতা হয়ে আসেন। তবে আফিফকে আক্রমণাত্মক দেখালেও রিয়াদ যেন শুরুতে ধুকছিলেন। তবে চার চারে ৪১ বলে ৪১ রানেই থামতে হয়েছে আফিফকে। মেহেদী মিরাজও বেশিক্ষণ টিকে থাকেননি। রিয়াদ তখন একাই চলতে থাকেন। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৬তম অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত ৮৪ বলে ৮০ রানে অপরাজিত ছিলেন। তিন চার ও তিন ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।
এএজে
