ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

Motobad news

কলাপাড়ায় ইউএনওর সই জালিয়াতি মামলায় সার্ভেয়ার গ্রেফতার

কলাপাড়ায় ইউএনওর সই জালিয়াতি মামলায় সার্ভেয়ার গ্রেফতার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালী কলাপাড়া ‍উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সই জালিয়াতি মামলায় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশাল শহরের রুপাতলী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসীম ‍এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলায় সূত্রে জানা যায়,  মুজিব শতবর্ষের গৃহহীন ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতক খাস জমি সহ সেমিপাকা একটি ঘর প্রদানের লক্ষ্যে ২৮ মার্চ, ২৪ এপ্রিল ও ১৯ মে  তিনটি স্মারকে ১৯৫ টি বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়াত রেজিস্ট্র কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সার্ভেয়ার মো. হুমায়ুন কবিরকে ক্ষমতা প্রদানপূর্বক তার স্বাক্ষর সত্যায়ন করে খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির অফিসের মূল ফরোয়ার্ডিং গোপন করে নিজের তৈরি স্ক্যান করা ফরোয়ার্ডিং দিয়ে তিন দফায় আরও ৪২টি বিত্তবান, কথিত ভূমিহীনের নাম অন্তর্ভূক্ত করে তাঁদের নামে ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাস জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন। এ বছরের ১৯ এপ্রিল ২২টির স্থলে ৩১টি, ২৪ এপ্রিল ১২০টির স্থলে ১৩২টি এবং ১৯ মে ৫৩টির স্থলে ৭৪টি কবুলিয়াত দলিল রেজিস্ট্রি করে নেয় সার্ভেয়ার হুমায়ুন। এই অতিরিক্ত ৪২টি দলিলে সর্বোচ্চ তিন একর থেকে নিচে এক একর করে খাস জমি বন্দোবস্ত দেখানো হয়েছে। ৬০ এর দশক থেকে ২০০২-২০০৩ দশকের তালিকার কেস নম্বর থেকে ৪২ টি নামে এই পরিমান খাস জমি মুজিবশতবর্ষের তালিকায় ঢুকিয়ে রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়েছে। কবুলিয়াতের দুই শতক লেখা জায়গায় হাতের লেখায় কাটা ছেঁড়া করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরের মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে ছিল। এর আগে তাকে চাকরি থেকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে ইউএনও নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ঘটনার সঙ্গে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। কারণ মুজিববর্ষের সকল কবুলিয়াত রেজিস্ট্রিতে দুই শতক খাস জমি দেয়ার কথা লেখা থাকলেও কীভাবে একে একে ৪২টি কবুলিয়াত রেজিস্ট্রি করা হয়েছে সর্বোচ্চ তিন একর খাস জমির। ওই অফিসের এক স্টাফের নামেও বন্দোবস্ত দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। বর্তমানে এই ৭২ একর খাস জমির মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা। 

এদিকে সাব রেজিস্টার রেহেনা পারভিন বলেন, ‘যেহেতু ভূমিহীন গৃহহীনদের দলিল ছিল, ইউএনওর সই ছিল। সার্ভেয়ার তাড়াহুড়া করে নামজারির কথা বলেছে। তাই সরল বিশ্বাসে প্রত্যেক পাতা দেখিনি। এখন তো দেখি এই অবস্থা।’

ওদিকে ওই ৪২টি কবুলিয়ত দলিল বাতিল করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে। 

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) মো. জসীম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সই জালিয়াতির অভিযোগ ‍এনে কলাপাড়া ‍উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বাদি হয়ে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে নামধারি ও অজ্ঞাত নামা আসামি করে ‍একটি মামলা দায়ের করেন। ‍এ মামলায় ‍ঐদিন সন্ধ্যার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরিশাল নগরীর রুপাতলী ‍এলাকার নিজ বাসা থেকে সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি একজন এসআইকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। 


মো. এনামুল হক/ ‍এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন