ক্ষমা চাইলেন সেই আ.লীগ নেতা


পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচন স্থগিত হওয়ার বিষয়ে আজ বুধবার তদন্ত করতে এসেছেন বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সকাল ১০ টায় তিনি (মো. আলাউদ্দিন) তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নিয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক ওরফে রাসেল তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে ক্ষমা চান।
গত ২৩ জুলাই আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুকের উপস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচারণার একটি উঠান বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক বলেছিলেন, ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। অতএব ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, টেনশনেরও কিছু নাই।’ ওই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে গত ২৪ জুলাই গনমাধ্যমে ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নিয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান পদের ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)গত ২৫ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২৭ জুলাই এখানে ভোট গ্রহণ করার কথা ছিল।
তদন্ত কর্মকর্তার সামনে জোবায়দুল হক বলেন, আমার বক্তব্যে যদি আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) কোনো ধরণের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, আমি আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। ইভিএম একটি শক্তিশালী নির্বাচনী ব্যবস্থা, এখানে কোনো ধরনের কারচুপি করার কোনো সুযোগ নাই। আমার বক্তব্য ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয় নাই। আমি বক্তব্য দিয়েছি একভাবে, উপস্থাপন হয়েছে আরেকভাবে। এখানে আমি তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হয়েছি। যা-ই হোক পরিশেষে আমি আপনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কাছে আমার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।
ভিন্নভাবে বক্তব্য উপস্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন,‘আমি বলেছি ভোট গননা হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে।’ কিন্তু পত্রিকায় লিখেছে ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে।’ তখন বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন তাঁর (জোবায়দুল) কাছে জানতে চান, কে কোথায় ভোট দেবে তা আপনার কাছে চলে যাবে কিভাবে? এমন প্রশ্নের তিনি কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সোহেল সামাদ, জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান (সঠিক নাম), জেলা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান খান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম, বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুক ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম মহসীন প্রমুখ ।
পরে বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একটি দল নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নের যে স্থানে বসে আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়দুল হক বক্তব্য দিয়েছিলেন সেখানে পরিদর্শনে যান এবং স্থানীয়দের বক্তব্য নেন।
এ বিষয়ে বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন,‘তদন্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মৌখিক বক্তব্যের ভিডিও, লিখিত বক্তব্য ও তথ্য-প্রমাণ নিয়েছি। যা মাননীয় নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসবে।’
এইচকেআর
