পুকুরে মধ্যে বাসর ঘর!


মানুষের শখের কোনো শেষ নেই। জীবনে শখ ছিল, বিয়েতে ব্যতিক্রম কিছু করার। আর এই শখ পূরণ করতে পুকুরে বাসর ঘর তৈরি করে নববধূকে নিয়ে সেই ঘরে উঠে এলাকায় হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া এলাকায়।
ওই এলাকার আবদুল হামিদের ৯ ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবার ছোট হালিম মিয়া (২৫) পুকুরের ওপর বাসর ঘর তৈরি করে আলোচনায় এসেছেন। এমনকি এই ঘটনা রীতিমতো গল্প আকারে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গ্রামে। ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
গতকাল শুক্রবার নববধূ মেঘলা ওরফে মায়াকে নিয়ে ওই বাসর ঘরে ওঠেন হালিম মিয়া। এর পর থেকেই পুকুরের ওপর ওই বাসর ঘরের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকা থেকেও লোকজন ব্যতিক্রমী এ বাসর ঘরটি দেখতে ভিড় জমায়। বাসর ঘরের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ২৩ জুন শনিবারও বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ওই বাসর ঘর দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
মানুষের ভিড় নবদম্পতিকে বিব্রত করার চেয়ে যেন আনন্দ দিয়েছে বেশ। লোকজন বাসর ঘর দেখতে ভিড় জমানোয় ঝামেলার পরিবর্তে নবদম্পতি হালিম মিয়া-মেঘলাসহ পরিবারের সবাই হাসিমুখেই তা মেনে নিয়েছেন।
বর হালিম মিয়া বলেন, ‘‘জীবনে ইচ্ছা ছিল ‘আনকমন’ কিছু করার। বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে আমার ব্যতিক্রম কিছু করার সাধ জাগে। তখন নানা আর চাচার সঙ্গে আলাপ করে পানিতে বাসর ঘর করার পরিকল্পনা করি। পরে চার-পাঁচ দিন ধরে আমাদের বাড়ির পাশে পুকুরের ওপর খুব কষ্ট করে বাসর ঘর তৈরি করা হয়। ’’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ঘরটি তৈরির পর আশপাশের মানুষ বাসর ঘরটি দেখতে আমার বাড়িতে আসতে শুরু করে। আমার খুব ভালো লাগছে। ’
হালিমের ভাতিজা রূপন ফরাজি ও সোহেল সরকার বলেন, আমাদের চাচার ইচ্ছা ছিল ব্যতিক্রমীভাবে বিয়ে করবেন। পরে তার বিয়ে ঠিক হলে আমরা পারিবারিকভাবে কয়েকবার বসে সিদ্ধান্ত নিই কী করা যায়। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় পানির ওপরে বাসর ঘর করার। পরে বাড়ির পাশের পুকুরের মাঝখানে বাসর ঘর তৈরি করা হয়। বানানোর সময় অনেকেই আজেবাজে কথা বলেছে। তবে ঘরটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে এই বাসর ঘর দেখতে মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করে। এখন অনেকেই দেখতে আসছে, ফেসবুক-ইউটিউবে প্রচার হচ্ছে। এতে আমাদের বেশ ভালো লাগছে। চাচার শখ পূরণ হয়েছে।
এলাকাবাসী আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘পুকুরের ওপর বাসর ঘর, একটি বিয়া, আমুদ করলোম। এইটাই আমাদের আনন্দ। ’
যোগিনীমুড়া থেকে বাসর ঘর দেখতে আসা সোহেল রানা বলেন, ‘এর আগে আমার জীবনে এমন বাসর ঘর দেখিনি। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে দেখতে এসেছি। আসলেই ব্যতিক্রম এটি। ’
চরশেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, ‘‘আমার ইউনিয়নে এমন বিয়ে হওয়ায় মানুষের মাঝে এ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। বলা যায় ‘টক অব দ্য ভিলেজ’। আমি আপ্লুত পানির ওপর এমন বাসর ঘর দেখে। আমার ইউনিয়নে এ নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ দেখতে আসছে। ’’
এএজে
