রাঙ্গাবালীতে ব্যবসায়ী অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি


পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
সোমবার এ ঘটনায় রাঙ্গাবালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
পরিবারের তথ্যানুযায়ী, রোববার রাতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তাকে দিয়েই বোনের কাছে মুঠোফোনে মুক্তিপণ চাওয়ানো হয়। এর পর থেকে মঙ্গলবার দিবাগত রাত পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
দুইদিনেও সন্ধান না পাওয়া ওই ব্যবসায়ীর নাম স্বপন ফকির (৩২)। তার বাড়ি উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা গ্রামে। সে চরলতা গ্রামের বারেক ফকিরের ছেলে। পেশায় ভূষা মাল ব্যবসায়ী। পুলিশ জানায়, রোববার সকালে স্বপনের নিখোঁজের ঘটনায় তার ভাই নিজাম ফকির বাদী হয়ে রাঙ্গাবালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
স্বপনের পরিবারের দাবি, শুক্রবার ডাল বিক্রি করতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা গলাচিপায় যান ভূষা মাল বিক্রেতা স্বপন। ডাল বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে স্বপন রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পৌনে ৯টায় খেয়া পার হয়ে উত্তর চরলতা গাছবন এলাকা পৌঁছায় সে। সেখান থেকে বাড়ি যেতে মটরসাইকেল চালককে ফোন দেয়। পরে গাড়ি চালক এসে স্বপনকে কল দিলে ফোন বন্ধ পায়। কিন্তু রাত ১১টা ৪৮ মিনিটে বোন হোসনেয়ারা বেগমের মুঠোফোনে স্বপনের একটি কল আসে। এ সময় কান্নাকাটি নিজের নিজের জীবন বাঁচাতে বোনকে মুক্তিপণের এক লাখ টাকা দিতে আকুতি করে স্বপন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বপনের দুলাভাই ইদ্রিস মুন্সি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর হোসনেয়ারা বেগমের মোবাইলে রাত ১১টা ৪৮ মিনিটে কল দেয় শ্যালক স্বপন। আমি তখন পাশে ছিলাম। কান্নাকাটি করে স্বপন বলে, বোন আমাকে বাঁচাও। আমাকে ধরে কোমনে নিয়া আইছে বলতে পারি না। আমার চোখ বাঁধা। এ সময় পাশ থেকে একজন গালি দিয়ে বলে ভাল করে কথা বল।
তার পর বলে, এক লাখ টাকা যে কোনো কায়দায় আপু তুমি মিল করে আমাকে বাঁচাও। এই কথা বলে ফোন কেটে দিছে। ফোন কাটার পর এখন পর্যন্ত আর কোনো যোগাযোগ করে নাই। এখন আছে না মাইরা ফালাইছে তা আমরা কিছু বলতে পারি না।
চালিতাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান বলেন, স্বপন অপহরণের কথা শুনেছি। এখনো তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাঙ্গাবালী থানার এসআই আল আমিন বলেন, রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে স্বপন যে নম্বর ব্যবহার করে সেটা থেকে তার বোনকে ফোন দেয়, এটা সত্য। ওটাই তার লাস্ট কল। আমরা লোকেশন ট্র্যাক করে দেখছি। স্বপনের সর্বশেষ লোকেশন তখন দেখায় পটুয়াখালী চৌরাস্তা। কিন্তু সে অপহরণ নাকি নিখোঁজ তা এখনো বলা যাচ্ছে না। এ নিয়ে আমরা কাজ করছি। সব থানাগুলোতে আমরা বেতার বার্তা দিয়ে দিচ্ছি। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এইচকেআর
