সাড়ে ১৪ লাখ টিকার ঘাটতি


করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় দেশের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা। কিন্তু অনিশ্চয়তায় পড়েছে দেশের টিকাদান কার্যক্রম। ৫৮ লাখের কিছু বেশি মানুষকে টিকা দিয়ে গত ২৬ এপ্রিল দেশের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া স্থগিত করা হয়। বর্তমানে মজুদ টিকা দিয়ে সর্বোচ্চ সাড়ে চার লাখ দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। এরপরও এই ডোজ থেকে বঞ্চিত হবেন প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ (১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮২৪) মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। টিকা সরবরাহ করতে সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে অনুরোধ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। টিকাদান কর্মসূচির এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে সরকার চীনের সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুটনিক ভি সংগ্রহে তৎপর হয়ে ওঠে। এসব বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। যদিও চীনের সিনোফার্ম শর্তসাপেক্ষে ইতোমধ্যে পাঁচ লাখ ডোজ পাঠিয়েছে এবং আরও ছয় লাখ ডোজ পাঠানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে। এছাড়া কোভ্যাক্স থেকে আগামী মাসে এক লাখ ডোজ টিকা দেবে বলে জানিয়েছে। তবে সেটি কোনো আশা জাগানিয়া খবর নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের আরও অভিমত, যত বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে মহামারি নিয়ন্ত্রণে তত সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে প্রথম ডোজ যারা পাবেন তাদের এক বছর পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকার কথা। তাই এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজের টিকা যে কোনো উপায়ে সংগ্রহ করতে হবে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতেই হবে। অন্যথায় বড় ঝুঁকিতে পড়বে দেশ।
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, টিকা পেতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চীনের সিনোফার্মা ৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি টিকা দেশে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, আগামী ২ জুন কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের অন্তত এক লাখ ছয় হাজার কোভিড ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পাঠাবে গ্যাভি। যদিও চীনের ও রাশিয়ার টিকার বিষয়ে এখনো চুক্তি সম্পন্ন না হওয়ায় এসব টিকা পেতে দেরি হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এমবি
