দিনাজপুরের খানসামায় সেতুর বদলে জনগণ পেল বাঁশ-কাঠের সাঁকো


দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ইছামতি নদীর সাঁকোর পাড়ের সেতুর নির্মাণকাজ ৪ বছরেও শেষ হয়নি। বিভিন্ন অজুহাতে কয়েকদফায় কাজ বন্ধ রাখায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। এতে এলাকার লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়ে।
এদিকে জনভোগান্তি কমাতে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করলেন গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন।
জানা যায়, গত ২০১৮ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহামুদ আলী উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ইছামতী নদীর বটতলী সাঁকোর পাড়ের ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ৩ কোটি ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৬ বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেতুর ২০১৮ সালের জুন মাস কাজ শুরু হয়ে এর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের জুন মাসে। কিন্তু এই গত চার বছর কেবল সেতুর পাইলিং ছাড়া আর কোনো কাজই করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চার বছর ধরে সেতুর কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৫০ ভাগ টাকা তুলে নিয়েছে। সময়মতো সেতুর কাজ শেষ না হওয়াই সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ইছামতী নদীর দুই পাড়ের মানুষ। যাতায়াতসহ অন্যান্য কাজে, বিশেষ করে বর্ষাকালে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ জনগণকে। অসুস্থ, গর্ভবতী ও স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অনেক দূর ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। তবে ইউপি চেয়ারম্যান সাঁকো নির্মান করে দেওয়ায় ভোগান্তি অনেকটা কমে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের হোসেন বলেন, গত চার বছরে শুধু সেতুর পাইলিং করা ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। এতে আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নদীর দুই পাড়ে রয়েছে স্কুল, হাট-বাজার। বর্ষার সময় ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারে না শিশুরা। কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারে না ঠিকমত। ১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয় তাদের। তবে সাঁকোটি নির্মাণ করায় আমাদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমেছে।
সাঁকোর পাড় মোড়ের মুদি দোকানদার রহিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ শেষ হবে বলে শুনেছি। কিন্তু ঠিকাদার নতুন করে কাজ ধরে না। কাজ শেষও হয় না। এতে নদীর দুই পাড়ের কৃষকরা পণ্য বাজারে নিতে প্রায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এতে তাদের ব্যয় বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোগান্তি দেখে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দিলেন। এতে নদীর দুই পাড়ের মানুষের কিছুটা হলেও ভোগান্তি কমবে। সরকারের কাছে আমাদের এলাকাবাসীর দাবি, সেতুর কাজটা দ্রুত শেষ করে এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটুক।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিডি) এর প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে লিখিত ভাবে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তবে বন্যার পর পরই এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ব্রীজ নির্মানে দেরি হওয়ায় এলাকার লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়ে। এজন্য টিআর প্রকল্পের আওতায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে ২৭৫ ফিট লম্বা কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। এতে এলাকার লোকজন সাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারছে।
এইচকেআর
